বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএ) অনুসারে, বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীর সংখ্যা অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিএএ অনুমান করছে যে বুধবার যুক্তরাজ্যে ৩ লক্ষ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ উড়ানে করে যাবেন, যা ২০২৪ সালের বড়দিনের আগের সন্ধ্যার তুলনায় ৫% বেশি।
সিএএ জানিয়েছে, উড়ানে যাত্রীর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। সড়কপথেও প্রচুর ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মোটরযান সংস্থা আরএসি-র পূর্বাভাস অনুযায়ী, রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় রাস্তায় সবচেয়ে বেশি ভিড় হতে পারে। তারা পরামর্শ দিয়েছে যে বুধবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে গাড়ি চালালে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হতে পারে, কারণ লক্ষ লক্ষ মানুষ বৃহস্পতিবার বড়দিনের আগে বাড়ি ফিরবেন, যার ফলে প্রধান রাস্তাগুলোতে যানজট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, অন্য একটি মোটরযান লবি মনে করে যে এই সময়ের সবচেয়ে বেশি যানজটের সময়কাল ইতিমধ্যেই পার হয়ে গেছে।
ম্যানচেস্টার বিমানবন্দর অনুমান করছে যে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় প্রায় ৭৫,০০০ যাত্রী এবং ২০৮টি উড়ান ছাড়বে। বিমানবন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে বড়দিনে এই সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যাবে। বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় ম্যানচেস্টার থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যগুলো হল আমস্টারডাম, প্যারিস এবং ডাবলিন। হিথ্রো বিমানবন্দর জানিয়েছে যে তারা তাদের ব্যস্ততম ডিসেম্বর মাসটি আশা করছে, যেখানে বড়দিনে ১ লক্ষ ৫২ হাজার যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইজিজেট জানিয়েছে যে তারা ৫৫৮টি উড়ান চালাবে।
উড়ানে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি ছুটির মরসুমে উড়ানে যাতায়াতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার একটি বৃহত্তর প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে। এই চাহিদা বিভিন্ন কারণ দ্বারা চালিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে মানুষের আয় বৃদ্ধি, পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর আকাঙ্ক্ষা এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উড়ানের উপলব্ধতা। সিএএ-র অনুমান ঐতিহাসিক ডেটা এবং বর্তমান বুকিং প্রবণতার উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা পরিসংখ্যানগত মডেল ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই মডেলগুলো যাত্রী সংখ্যা পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিমান সংস্থার ক্ষমতা এবং গ্রাহকদের আত্মবিশ্বাসের মতো বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।
উড়ানে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বিমানবন্দরগুলোর পরিকাঠামো এবং কর্মীসংখ্যার উপর প্রভাব পড়ছে। বিমানবন্দরগুলো যাত্রীদের চলাচলকে সুগম করতে, багаж ব্যবস্থাপনার উন্নতি করতে এবং নিরাপত্তা স্ক্রিনিং উন্নত করতে এআই-চালিত সিস্টেম ব্যবহার করছে। এই সিস্টেমগুলো রিয়েল-টাইম ডেটা বিশ্লেষণ করে কোথায় ভিড় হতে পারে তা আগে থেকে জানতে পারে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়। উদাহরণস্বরূপ, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমগুলো নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে অপেক্ষার সময় অনুমান করতে পারে, যা বিমানবন্দরগুলোকে আরও দক্ষতার সাথে কর্মী নিয়োগ করতে সাহায্য করে।
বিমান চলাচলে এআই-এর ব্যবহার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এআই-চালিত সিস্টেমগুলো উড়ানের পথ এবং আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে উড়ানের রুটগুলোকে অপ্টিমাইজ করতে এবং বিলম্ব কমাতে পারে। এই সিস্টেমগুলো এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের আরও দক্ষতার সাথে আকাশসীমা পরিচালনা করতে, নিরাপত্তা উন্নত করতে এবং জ্বালানী খরচ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই এআই সিস্টেমগুলোর উন্নয়ন এখনও চলছে, এবং গবেষকরা তাদের নির্ভুলতা এবং নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করার জন্য নতুন উপায় খুঁজে বের করছেন।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment