নাইজেরিয়ায় বড়দিনের দিনে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু সমর্থক স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, দেশটিতে খ্রিস্টানদের হত্যার জবাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষয়ক্ষতির ছবি দেখে জানা যায়, কোয়াড়া রাজ্যের অফ্ফাতে আইএস জঙ্গিদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
ট্রাম্পের কিছু সমর্থকের প্রতিক্রিয়া ছিল সামরিক পদক্ষেপের প্রতি সমর্থনসূচক। কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী লরা লুমার X-এ পোস্ট করেছেন, "ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের ব্যাপক নিধনের মাধ্যমে খ্রিস্টানদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার চেয়ে বড়দিনের উদযাপনের আর ভালো উপায় আমার জানা নেই। এটা দারুণ! সব ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হোক! ধন্যবাদ।" লুমার দাবি করেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর, যাকে ট্রাম্প প্রশাসন "যুদ্ধ দফতর" বলত, তাকে জানিয়েছে যে নাইজেরিয়ার সরকারের সম্মতিতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী তাদের অভিযানে ক্রমশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করছে, যার মধ্যে লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিতকরণ এবং হামলার সমন্বয়ও রয়েছে। এআই অ্যালগরিদমগুলি বিপুল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে, যার মধ্যে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি, সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট এবং যোগাযোগের বিষয়বস্তুও রয়েছে। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা এবং সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন করা যায়। এআই-এর এই ব্যবহার জবাবদিহিতা এবং লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে কিছু নৈতিক প্রশ্ন তোলে। অ্যালগরিদমিক পক্ষপাতিত্ব, এআই সিস্টেমের একটি পরিচিত সমস্যা। অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ডেটাতে যদি সমাজের বিদ্যমান পক্ষপাতিত্ব প্রতিফলিত হয়, তবে এটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের কারণ হতে পারে।
এই হামলা এমন এক পটভূমিতে হয়েছে, যখন নাইজেরিয়ায় ক্রমাগত সহিংসতা ও অস্থিরতা চলছে এবং আইএস-এর শাখা সহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। নাইজেরিয়ার সরকার এই গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে এবং অতীতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। নাইজেরিয়ায় আইএস-কে লক্ষ্যবস্তু বানানো আফ্রিকা মহাদেশে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং চরমপন্থী মতাদর্শের বিস্তার রোধের বৃহত্তর মার্কিন কৌশলের প্রতিফলন।
নাইজেরিয়ার সরকার এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। এই হামলার ফলে অঞ্চলের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও নাইজেরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক কতটা প্রভাবিত হবে, তা দেখার বিষয়। ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যাচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment