একটি বহুল সমালোচিত নির্বাচনের প্রথম দিনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার সাথে সাথে মিয়ানমারের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার সম্মুখীন, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে সামরিক সরকার কর্তৃক এই ধাপে ধাপে ভোটের মাধ্যমে তাদের শাসনকে বৈধ করার প্রচেষ্টা সম্ভবত ইতিমধ্যে ভঙ্গুর ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।
প্রায় পাঁচ বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা ব্যাপক বিরোধিতা এবং একটি ক্রমবর্ধমান গৃহযুদ্ধকে উস্কে দিয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বিলুপ্ত, নেতারা কারাবন্দী এবং সম্ভবত দেশের অর্ধেক মানুষ ভোট দিতে অক্ষম হওয়ায় নির্বাচনের বৈধতা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতা সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলছে, অনেক আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই তাদের কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে বা মিয়ানমার থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। নতুন আইনে নির্বাচনের বিরোধিতা করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, যার ফলে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যা দেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
চলমান সংঘাত ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত হয়েছে। ভোটের প্রথম দফায় একাধিক অঞ্চলে বিস্ফোরণ ও বিমান হামলার খবরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো যে নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়েছে। জান্তার চীনের সমর্থনের উপর নির্ভরতা অর্থনৈতিক জোটের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তন নির্দেশ করে, যা পশ্চিমা বাজার এবং বিনিয়োগ থেকে মিয়ানমারকে আরও বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
অভ্যুত্থানের আগে থেকেই মিয়ানমারের ব্যবসায়িক পরিবেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল, যা দুর্নীতি, দুর্বল অবকাঠামো এবং স্বচ্ছতার অভাবে জর্জরিত ছিল। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট এই সমস্যাগুলোকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে ব্যবসা পরিচালনা এবং উন্নতি করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। মিয়ানমারের অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি এখনও হতাশাব্যঞ্জক, কারণ অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সংঘাত বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্বাচনকে নিন্দা জানানো এবং সম্ভাব্য আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ মিয়ানমারের অর্থনীতিকে আরও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং দেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment