অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে যুক্তরাজ্য সস্তা চীনা পণ্যের একটি ঢেউয়ের সম্মুখীন হতে চলেছে, যা সম্ভবত আমেরিকা ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার ফলস্বরূপ মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের দিকে পরিচালিত করবে। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ইঙ্গিত দিয়েছে যে ইউকে চীনা পণ্যের জন্য একটি পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠছে, কারণ চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত শুল্কের প্রভাব কমাতে বিকল্প বাজার খুঁজছে।
এই পরিবর্তনটি সাম্প্রতিক তথ্যের পরে এসেছে যেখানে দেখা গেছে যে ওয়াশিংটনের শুল্ক নীতি কার্যকর করার পরেও চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হ্রাস করা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চের উপ-পরিচালক স্টিফেন মিলার্ড বলেছেন, "এমন একটি প্রত্যাশা রয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের উপর যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করছে, তাতে চীন তার বাণিজ্য অন্য দিকে সরিয়ে নেবে এবং সেই স্থানগুলির মধ্যে একটি হবে ইউকে।"
সস্তা পণ্যের সম্ভাব্য আগমন ইউরোপীয় নির্মাতাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, যারা যুক্তরাজ্যের বাজারে চীনা পণ্য থেকে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার আশঙ্কা করছেন। চীনা রফতানির এই পরিবর্তন ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি ফলস্বরূপ, যা বিস্তৃত চীনা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করেছিল, যার ফলে চীন তার রফতানির জন্য বিকল্প বাজার খুঁজতে বাধ্য হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের মূলে রয়েছে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা, মেধা সম্পত্তি চুরি এবং বাজার প্রবেশে বাধার মতো দীর্ঘদিনের অভিযোগ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলনের অভিযোগ করেছে, অন্যদিকে চীন মার্কিন পণ্যের উপর নিজস্ব শুল্ক আরোপ করে প্রতিশোধ নিয়েছে। এই সংঘাত বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থাকে ব্যাহত করেছে এবং বিশ্বজুড়ে ব্যবসার জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের প্রস্থান এবং তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত অর্থনীতির কারণে চীনের রফতানি সরানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা এটিকে নিজস্ব বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করতে দেয়। তবে কিছু অর্থনীতিবিদ সতর্ক করেছেন যে চীন থেকে সস্তা আমদানির উপর নির্ভরতা দেশীয় শিল্প এবং কর্মসংস্থানের জন্য নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এই বাণিজ্য সরানোর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনও দেখার বিষয়।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment