বাংলাদেশের প্রথম নারী নেত্রী, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্ব নেতারা তার অবদানের কথা স্বীকার করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার একটি হাসপাতালে দীর্ঘ রোগভোগের পর ৮০ বছর বয়সে জিয়া মারা যান।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা মুহাম্মদ ইউনূস তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি তাকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেন এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও একটি বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন জয় ও বেদনা উভয়টিতেই পরিপূর্ণ ছিল। স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর তিনি খ্যাতির শিখরে আরোহণ করেন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্ব দেন এবং ১৯৯১ সাল থেকে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদকালে অর্থনৈতিক উদারীকরণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। তবে, তাকে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইনি চ্যালেঞ্জের দিকে পরিচালিত করে।
পুরো কর্মজীবনে, জিয়া প্রায়শই নারীদের প্রতি বৈরী রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেওয়া এবং একটি দেশ পরিচালনা করার সময় তিনি লিঙ্গীয় стереотипы (стереотипы) এবং সামাজিক প্রত্যাশার सामना করেছেন। তার ক্ষমতারোহণ বাংলাদেশ এবং এর বাইরের অনেক নারীকে অনুপ্রাণিত করেছে, যা প্রমাণ করে যে নারীরা দেশের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে।
তার অর্জন সত্ত্বেও, জিয়ার legado (লেগ্যাডো) জটিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছে, যা একটি গভীরভাবে বিভক্ত সমাজে অবদান রেখেছে। কেউ কেউ তাকে গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন এবং দরিদ্রদের রক্ষক হিসেবে দেখেন, আবার কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং তার দলের ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন।
খালেদা জিয়ার মৃত্যু এমন এক সময়ে ঘটল, যখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। নির্বাচন আসন্ন, এমন পরিস্থিতিতে তার অনুপস্থিতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিএনপি, তাদের দীর্ঘদিনের নেত্রীবিহীন অবস্থায়, দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখা এবং ভোটারদের আকৃষ্ট করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আগামী দিনগুলোতে জিয়ার জীবন ও legado (লেগ্যাডো) নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে, কারণ বাংলাদেশ তার প্রয়াণের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব নিয়ে গভীরভাবে विचार করবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment