কেপলার নামক একটি বিশ্লেষণী সংস্থার তথ্য অনুসারে, ভারতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল সরবরাহ এই মাসে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে দৈনিক গড়ে ১১ লক্ষ ব্যারেল সরবরাহ হতে পারে। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর থেকে এটি সর্বনিম্ন স্তর, যদিও রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানির উপর সাম্প্রতিক মার্কিন পদক্ষেপের পর ভারতীয় কর্মকর্তাদের করা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।
ভারতে রাশিয়ার তেল সরবরাহ হ্রাসের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞার সম্মতি এবং পরিবর্তনশীল বাজারের গতিশীলতার উপর ক্রমবর্ধমান নজরদারি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার জ্বালানি খাতের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যার ফলে কিছু ক্রেতা ও জাহাজ সরবরাহকারীদের মধ্যে সতর্কতা বেড়েছে। এআই-চালিত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এই বর্ধিত সতর্কতা কার্গোর উৎস এবং গন্তব্যগুলির আরও নির্ভুলভাবে সন্ধান করতে সাহায্য করে, যা বিধিনিষেধকে ফাঁকি দেওয়া কঠিন করে তোলে। এই সিস্টেমগুলি শিপিং ম্যানিফেস্ট, স্যাটেলাইট চিত্র এবং আর্থিক লেনদেন বিশ্লেষণ করতে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে, যা সম্ভাব্য অবৈধ কার্যকলাপ চিহ্নিত করে।
তবে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর ক্রয় পুনরায় শুরু করার মাধ্যমে প্রত্যাশিত পতন হ্রাস করা যেতে পারে। এটি অন্যান্য গ্রেডের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম দামের কারণে ভারতে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের চাহিদা বজায় থাকার বিষয়টি তুলে ধরে। রিলায়েন্সের এই সিদ্ধান্ত, সম্ভবত এআই-চালিত বাজার বিশ্লেষণের দ্বারা প্রভাবিত যা অনুকূল মূল্য নির্ধারণের প্রবণতা দেখাচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রণোদনাগুলিকে আরও শক্তিশালী করে যা ভারতের জ্বালানী নীতিকে ক্রমাগত রূপ দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিটি জ্বালানি খাত এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এআই-এর বৃহত্তর প্রভাবকে চিত্রিত করে। এআই অ্যালগরিদমগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে সরবরাহ চেইন অপ্টিমাইজ করতে, দামের ওঠানামা অনুমান করতে এবং আন্তর্জাতিক বিধিবিধানের সম্মতি নিরীক্ষণ করতে ব্যবহৃত হয়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ছে, যা সম্ভবত বৃহত্তর দক্ষতা আনতে পারে তবে অ্যালগরিদমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা এবং পক্ষপাতিত্ব সম্পর্কে উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
জ্বালানি বিশ্লেষক রাকেশ শর্মা বলেন, "তেল প্রবাহ ট্র্যাক করার ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার ক্রমশ অত্যাধুনিক হয়ে উঠেছে।" "এটি নিষেধাজ্ঞার আরও ভাল প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করে, তবে জটিল নিয়ন্ত্রক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চাওয়া সংস্থাগুলির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি করে।"
ভারত সরকার রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে, সাশ্রয়ী মূল্যের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। এই অবস্থানের কারণে ভারত রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের একটি প্রধান আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে, যা ছাড়ের দাম থেকে উপকৃত হচ্ছে। তবে, দেশটি রাশিয়ান জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে পশ্চিমা দেশগুলির কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান চাপের সম্মুখীন হচ্ছে।
সামনে তাকালে, ভারতে রাশিয়ান তেল সরবরাহের ভবিষ্যৎ বেশ কয়েকটি কারণের উপর নির্ভর করবে, যার মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মতো প্রধান খেলোয়াড়দের কৌশলগত সিদ্ধান্ত অন্যতম। এই প্রবাহগুলি পর্যবেক্ষণ এবং আকার দেওয়ার ক্ষেত্রে এআই-এর ভূমিকা বাড়তে পারে, যা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারের গতিশীলতাকে আরও জটিল করে তুলবে। বাজারের পরিবর্তনগুলি অনুমান করতে এবং সাড়া দিতে এআই-এর ক্ষমতা আগামী মাসগুলিতে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment