দীর্ঘ রোগভোগের পর মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্ব নেতারা তাঁর অগ্রণী ভূমিকা, দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অবদানকে স্মরণ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর বয়স ছিল ৮০ বছর।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা মুহাম্মদ ইউনূস তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও একটি বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তাঁর আত্মনিবেদনের ওপর জোর দিয়েছেন।
জিয়ার রাজনৈতিক জীবন জয় ও বেদনা উভয় দিক দিয়েই চিহ্নিত। ১৯৮১ সালে তাঁর স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর তিনি খ্যাতির শিখরে আরোহণ করেন। এরপর তিনি ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) বিরোধী দলে নেতৃত্ব দেন। তাঁর শাসনকালে অর্থনীতি উদারীকরণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। তবে, তাঁকে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যার ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।
পুরো কর্মজীবনে জিয়া প্রায়শই পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো দ্বারা প্রভাবিত একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামলেছেন। তাঁর ক্ষমতার আগমন ঐতিহ্যবাহী প্রথাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারীদের জন্য পথ প্রশস্ত করে। অসংখ্য বাধা সত্ত্বেও তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি নারীদের জনজীবনে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।
যদিও জিয়ার legado (উত্তরাধিকার) বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলে ভিন্নভাবে দেখা হয়, তবে দেশের প্রথম নারী নেত্রী হিসেবে তাঁর ভূমিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তাঁর মৃত্যু কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে নারীদের যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, সে বিষয়ে reflection (চিন্তা) করার সুযোগ তৈরি করে। সমান প্রতিনিধিত্বের জন্য সংগ্রাম এবং পদ্ধতিগত বাধা অপসারণ বিশ্বজুড়ে নারীদের জন্য একটি জরুরি বিষয়।
জানা গেছে, তাঁর দাফন এবং শোকসভা সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত তথ্য আগামী দিনে ঘোষণা করা হবে। বিএনপি সম্ভবত শোক পালন করবে এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাঁর মৃত্যুর পর দেশের রাজনৈতিক গতিশীলতায় সম্ভাব্য পরিবর্তন আশা করছেন।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment