একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে মার্কিন কর্মকর্তারা ইমরান আহমেদকে (Imran Ahmed) ডিসেম্বর মাসে deport করার চেষ্টা করেছিলেন। ইমরান আহমেদ একজন স্থায়ী বৈধ বাসিন্দা এবং বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য (hate speech) নিয়ে গবেষক। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপটি ছিল তার বাক-স্বাধীনতার (protected speech) উপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে আহমেদকে গ্রেপ্তার ও deport করা থেকে আটকাতে। Deport করা হলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারতেন না, যেখানে তার স্ত্রী ও সন্তান, দুজনেই মার্কিন নাগরিক, বসবাস করেন।
আহমেদ, যিনি সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেট (CCDH)-এর প্রতিষ্ঠাতা, একটি ব্রিটিশ-আমেরিকান বেসরকারি সংস্থা, বড়দিনের দিনে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পান। তিনি যুক্তি দেখান যে এতে তার অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন যে ট্রাম্প প্রশাসন (Trump administration) অভিবাসন ব্যবস্থাকে (immigration system) ব্যবহার করে অ-নাগরিকদের তাদের বাক-স্বাধীনতার জন্য শাস্তি দিচ্ছে এবং তাদের ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দিচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন যে এর ফলে তার বক্তব্য সীমিত হয়ে গেছে।
CCDH অনলাইন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে গবেষণা ও প্রচারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তাদের কাজের মধ্যে প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি বিশ্লেষণ করা এবং ক্ষতিকারক কনটেন্টের প্রবণতা চিহ্নিত করা জড়িত। এই গবেষণা কখনও কখনও প্রযুক্তি সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সাথে সংস্থাটির বিরোধ সৃষ্টি করে, যারা মনে করেন যে তারা তাদের অনুসন্ধানের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ইলন মাস্ক (Elon Musk) এর আগে আহমেদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যা মাস্কের টুইটার (বর্তমানে X) অধিগ্রহণের পর তাকে মাস্কের প্রথম দিকের আইনি প্রতিপক্ষ করে তুলেছিল।
মামলাটিতে বলা হয়েছে যে আহমেদকে deport করার প্রচেষ্টা সরাসরি CCDH-এর সাথে তার কাজের সাথে সম্পর্কিত ছিল। এতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে মার্কিন কর্মকর্তারা অনলাইনে বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তার গবেষণা ও প্রচারের জন্য আহমেদকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা প্রথম সংশোধনী (First Amendment) অনুসারে সুরক্ষিত বক্তব্য। এই মামলাটি সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গবেষক ও সংস্থাগুলির উপর ভীতিজনক প্রভাবের সম্ভাবনা সম্পর্কে উদ্বেগ সৃষ্টি করে, যারা বিতর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে তদন্ত করে এবং কথা বলে।
"সুরক্ষিত বক্তব্য" ধারণাটি মামলার কেন্দ্রবিন্দু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রথম সংশোধনী সরকারকে হস্তক্ষেপ না করে মতামত এবং ধারণা প্রকাশের অধিকার রক্ষা করে, তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সহিংসতা বা মানহানি (defamation) উৎসাহিত করে এমন বক্তব্য সুরক্ষিত নয়। মামলাটিতে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে আহমেদের গবেষণা এবং প্রচার এই ব্যতিক্রমগুলির আওতায় পড়ে না এবং তাই এটি প্রথম সংশোধনীর দ্বারা সুরক্ষিত।
এই মামলাটি বৃহত্তর সমস্যাটিকেও স্পর্শ করে যে কীভাবে সরকার এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলি অনলাইন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং ভুল তথ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial intelligence / AI) এই ধরনের কনটেন্টের বিস্তার এবং সনাক্তকরণ উভয় ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। AI অ্যালগরিদমগুলি (algorithms) কিছু ধরণের কনটেন্টকে প্রসারিত করতে ব্যবহৃত হয়, কখনও কখনও অজান্তেই বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করে। বিপরীতভাবে, AI ক্ষতিকারক কনটেন্ট সনাক্ত এবং অপসারণের জন্যও তৈরি করা হচ্ছে। তবে, এই AI-চালিত কনটেন্ট মডারেশন সিস্টেমগুলি (content moderation systems) সর্বদা নির্ভুল নয় এবং কখনও কখনও বৈধ বক্তব্যের সেন্সরশিপের দিকে পরিচালিত করতে পারে, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
আপাতত, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাটি এখনও বহাল রয়েছে, যা আহমেদকে deport করা থেকে বিরত রেখেছে। মামলাটি চলমান, এবং আদালতকে নির্ধারণ করতে হবে যে সরকারের পদক্ষেপগুলি সত্যিই আহমেদকে তার সুরক্ষিত বক্তব্যের জন্য শাস্তি দেওয়ার ইচ্ছাকৃত উদ্দেশ্য ছিল কিনা। মামলার ফলাফল গবেষক এবং আইনজীবীদের অধিকারের জন্য এবং অনলাইন বক্তব্য এবং সরকারি বিধিবিধান সম্পর্কে বৃহত্তর বিতর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment