ইসরায়েলের উদ্বেগের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো এস্টেটে ট্রাম্পের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য সাক্ষাৎ করার সময় এই সতর্কতা জারি করা হয়। ট্রাম্পের এই সতর্কবার্তাটি তার আগের সেই দাবির ধারাবাহিকতা, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে জুনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহুর আগমনের পরপরই সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, "এখন আমি শুনছি যে ইরান আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করার চেষ্টা করছে, এবং যদি তারা তা করে, তবে আমাদের তাদের প্রতিহত করতে হবে। আমরা তাদের প্রতিহত করব। আমরা তাদের চরমভাবে প্রতিহত করব। তবে আশা করি তেমন কিছু ঘটবে না।"
ইসরায়েলি সরকার স্থানীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে ইরানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচিত। এই উদ্বেগগুলি চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিরীক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকায় মাদক পাচার প্রতিরোধের দিকে মনোযোগ দিয়েছে এবং ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মার্কিন-দালালি করা যুদ্ধবিরতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। গাজা চুক্তিটি তার দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে সম্ভাব্য বাধার সম্মুখীন হতে পারে, যার মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক গভর্নিং বডি প্রতিষ্ঠা এবং এই অঞ্চলে পুনর্গঠন প্রচেষ্টা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ২০১৫ সালের জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA), যা সাধারণভাবে ইরান পরমাণু চুক্তি নামে পরিচিত, সেই সময় থেকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এই চুক্তিতে ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, যার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র JCPOA থেকে বেরিয়ে যায় এবং ইরানের উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো ইউরোপীয় শক্তিগুলো JCPOA বাঁচানোর জন্য কাজ করছে, কিন্তু ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা, সেইসাথে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আঞ্চলিক কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগের কারণে তাদের প্রচেষ্টা জটিল হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে চলেছে।
এই পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি তৈরি করতে পারে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও এর বৃহত্তর আঞ্চলিক ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আরও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment