বিবিসি-র বিশ্লেষণ অনুসারে, ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ গত ১০ মাসে দ্রুত বেড়েছে, যা ২০২২ সালে পূর্ণ-মাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি। হতাহতের এই বৃদ্ধি এমন সময়ে ঘটেছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের চাপের মুখে ২০২৫ সালে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।
বিবিসি, স্বাধীন আউটলেট মিডিয়াযোনা এবং একদল স্বেচ্ছাসেবীর সাথে যৌথভাবে ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে রাশিয়ার যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব রাখছে। তাদের পদ্ধতিতে সরকারি প্রতিবেদন, সংবাদপত্র, সামাজিক মাধ্যম এবং স্মৃতিস্তম্ভ ও সমাধির মতো ভিজ্যুয়াল নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এখন পর্যন্ত, দলটি ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত প্রায় ১,৬০,০০০ ব্যক্তির নাম যাচাই করেছে।
বিবিসি নিউজ রাশিয়ানের ওলগা ইвшиনা উল্লেখ করেছেন যে রাশিয়ার সূত্রগুলোতে সৈন্যদের শোকসংবাদ প্রকাশের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে, যা মৃত্যুর খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
যদিও নিশ্চিত হওয়া মৃতের সংখ্যা যথেষ্ট, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বিবিসির বিশ্লেষণ, যা কবরস্থান, যুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এবং শোকসংবাদের ডেটা অন্তর্ভুক্ত করে, তা একটি রক্ষণশীল অনুমান হিসেবে বিবেচিত হয়। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে সঠিক তথ্য পেতে অসুবিধা এবং কম রিপোর্ট করার সম্ভাবনা নিশ্চিত হওয়া এবং অনুমিত সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।
রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতির এই বৃদ্ধি সামরিক কৌশল এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপের প্রেক্ষাপটে ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি চুক্তির জন্য চাপ দেওয়া সংঘাত নিরসনে এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করার বৃহত্তর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতিফলন। তবে, হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে বোঝা যায় যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও যুদ্ধ এখনও তীব্র।
চলমান সংঘাত এবং এর সাথে জড়িত মানবিক মূল্য রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাণহানির ঘটনা পরিবার এবং সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব ফেলে, অন্যদিকে যুদ্ধের অর্থনৈতিক চাপ জাতীয় সম্পদ এবং উন্নয়নে প্রভাব ফেলে। এই সংঘাতের বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা গতিশীলতাকে প্রভাবিত করে। পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল, তাই যুদ্ধের গতিপথ বোঝার জন্য হতাহতের সংখ্যা এবং কূটনৈতিক অগ্রগতির উপর ক্রমাগত নজর রাখা জরুরি।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment