রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রায় চার বছর ধরে চলা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছে, তবে অঞ্চল এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কিত অমীমাংসিত বিষয়গুলো এখনও উল্লেখযোগ্য বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, এই সমস্যাগুলো হলো "এক বা দুটি খুব কঠিন, খুব জটিল বিষয়।"
ক্রেমলিন ট্রাম্পের এই মূল্যায়নের সাথে একমত যে আলোচনা "চূড়ান্ত পর্যায়ে" রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে আরও আলোচনার জন্য ৬ জানুয়ারি ফ্রান্সে ইউরোপীয় নেতাদের সাথে দেখা করবেন। তবে, অবশিষ্ট যেকোনো মতানৈক্য পুরো চুক্তিটিকে ভেস্তে দিতে পারে।
সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল ডনবাস অঞ্চলের ভাগ্য, যা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। যদিও রাশিয়ান বাহিনী বর্তমানে লুহানস্ক অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ দখল করে রেখেছে, তবে তাদের নিয়ন্ত্রণ দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৭৫% পর্যন্ত বিস্তৃত। পুতিনের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাটোরস্কের অবশিষ্ট শহরগুলো দখল করা, যা ইউক্রেনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক লাইন তৈরি করেছে। জেলেনস্কি একটি আপোষ প্রস্তাব দিয়েছেন, কিন্তু পুতিন এখনও পর্যন্ত তার চরমপন্থী দাবিতে অনড় রয়েছেন।
ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বর্তমানে কেন্দ্রটি রাশিয়ার দখলে রয়েছে, যা এর সুরক্ষা এবং কর্মক্ষম অখণ্ডতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। একটি শান্তি চুক্তির অধীনে কীভাবে কেন্দ্রটি পরিচালিত এবং সুরক্ষিত করা হবে তার বিশদ বিবরণ এখনও সমাধান করা হয়নি।
বর্তমান আলোচনা ওয়াশিংটনে প্রণীত ২০-দফা পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউক্রেন সকলেই অগ্রগতি স্বীকার করেছে, তবে চূড়ান্ত ফলাফল এই মূল বিরোধগুলো সমাধানের উপর নির্ভর করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই উন্নয়নের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখছে, কারণ এই সংঘাতের সমাধান আঞ্চলিক ও বিশ্ব স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment