তবে, অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে মৃতের সংখ্যা কম হওয়া মানে এই নয় যে অভিবাসীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কামিনান্দো ফ্রন্টেরাসের গবেষণা সমন্বয়ক হেলেনা মালেনো বলেছেন, কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে অভিবাসীরা আরও বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাসের প্রধান কারণ হলো কঠোর সীমান্ত পাহারা, বিশেষ করে মৌরিতানিয়ায়। ২০২৪ সালে, মৌরিতানিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ২১০ মিলিয়ন ইউরোর একটি অভিবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য অভিবাসন প্রবাহ কমানো। এই চুক্তির ফলে মৌরিতানিয়ার উপকূলে নজরদারি ও আটকের প্রচেষ্টা বেড়েছে।
আরও বিপজ্জনক পথের দিকে এই পরিবর্তন নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং অভিবাসীদের আচরণের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ককে তুলে ধরে। ঐতিহ্যবাহী পথগুলো আরও বেশি সুরক্ষিত হওয়ার সাথে সাথে, স্পেনে প্রবেশ করতে চাওয়া ব্যক্তিরা বিকল্প পথ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন, যার মধ্যে প্রায়শই দীর্ঘ দূরত্ব, কম নিরাপদ নৌযান এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এই ঘটনা অভিবাসন চ্যালেঞ্জের সমাধানে শুধুমাত্র সীমান্ত enforcement-এর উপর মনোযোগ দেওয়ার সীমাবদ্ধতাকেই তুলে ধরে।
এই পরিস্থিতি সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়েও নৈতিক প্রশ্ন তোলে। উপকূলীয় এলাকা পর্যবেক্ষণ এবং অবৈধ পারাপার সনাক্ত করতে AI-চালিত নজরদারি ব্যবস্থা ক্রমশ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তিগুলো সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়াতে পারলেও, এর মাধ্যমে অভিবাসীদের আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা পরোক্ষভাবে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অভিবাসন প্যাটার্ন অনুমান করতে এবং সেই অনুযায়ী সম্পদ বিতরণের জন্য ভবিষ্যদ্বাণীমূলক অ্যালগরিদম ব্যবহার করা নিয়েও পক্ষপাতিত্ব এবং বৈষম্যের উদ্বেগ রয়েছে। এই অ্যালগরিদমগুলো ঐতিহাসিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পক্ষপাতিত্বকে প্রতিফলিত করতে পারে, যার ফলে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী непропорциональноভাবে টার্গেটেড হতে পারে।
এই প্রবণতাগুলোর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা জনসংখ্যাকে স্থানচ্যুত করতে থাকলে, ইউরোপীয় সীমান্তের উপর চাপ আরও বাড়তে পারে। শুধুমাত্র enforcement-ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই বা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। পরিবর্তে, বিশেষজ্ঞরা একটি আরও ব্যাপক কৌশল গ্রহণের কথা বলছেন যা অভিবাসনের মূল কারণগুলোকে মোকাবেলা করে, অভিবাসনের জন্য নিরাপদ এবং বৈধ পথের প্রচার করে এবং মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। ইইউ কমিশন এই পরিবর্তনশীল চ্যালেঞ্জগুলোর আলোকে তার অভিবাসন নীতি পর্যালোচনা করার সাথে সাথে আরও উন্নয়নের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment