এই সংখ্যা পূর্ববর্তী ১২ মাসে নথিভুক্ত ১০,৪৫৭ মৃত্যুর তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস। তবে, অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন যে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া মানে এই নয় যে অভিবাসীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কামিনান্দো ফ্রন্টেরাসের গবেষণা সমন্বয়ক হেলেনা মালেনো বলেছেন, কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে অভিবাসীরা ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাসের প্রধান কারণ হলো সীমান্ত পুলিশিং জোরদার করা, বিশেষ করে মৌরিতানিয়ায়। ২০২৪ সালে, মৌরিতানিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ২১০ মিলিয়ন ইউরোর একটি অভিবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং অভিবাসন প্রবাহ কমানো। এই চুক্তি, অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে করা হলেও, অনিচ্ছাকৃতভাবে অভিবাসীদের আরও বিপজ্জনক সমুদ্রপথে ঠেলে দিয়েছে, এমনটাই বলছে বিভিন্ন অ্যাডভোকেসি গ্রুপ।
এই পরিস্থিতি সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অভিবাসী সুরক্ষার মধ্যে জটিল সম্পর্ককে তুলে ধরে। যেখানে এআই-চালিত নজরদারি ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যৎবাণীমূলক পুলিশিং মডেলগুলি ক্রমবর্ধমানভাবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে, সেখানে সমুদ্রে মৃত্যু প্রতিরোধে তাদের কার্যকারিতা বিতর্কের বিষয়। এই প্রযুক্তিগুলি, প্রায়শই মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমের উপর ভিত্তি করে তৈরি, সম্ভাব্য ক্রসিংগুলি অনুমান করতে এবং আটকাতে অভিবাসন প্রবাহের ধরণ বিশ্লেষণ করে। তবে, সমালোচকরা বলছেন যে এই ধরনের সিস্টেমগুলি অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধা তৈরি করতে পারে এবং অভিবাসীদের আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে, যা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে এআই-এর ব্যবহার নৈতিক বিবেচনাও বাড়ায়। অ্যালগরিদমিক পক্ষপাতিত্ব, যেখানে এআই সিস্টেমগুলি বিদ্যমান সামাজিক বৈষম্যকে টিকিয়ে রাখে, অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যমূলক ফলাফলের দিকে পরিচালিত করতে পারে। এআই-চালিত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির মোতায়েনে ন্যায্যতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি অনিচ্ছাকৃত ক্ষতি প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চলমান পরিস্থিতি অভিবাসন বিষয়ক ব্যাপক নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয় যা অভিবাসীদের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়। অধিকারকর্মী এবং মানবিক সংস্থাগুলি অভিবাসনের জন্য নিরাপদ, আইনি পথের পক্ষে এবং বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলি মোকাবেলায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য ক্রমাগত সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত সুরক্ষার সাথে আশ্রয় ও সুযোগ সন্ধানকারীদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে ভারসাম্য রেখে সমাধান খোঁজার দিকেই মূল মনোযোগ রয়েছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment