পিএলএ-র ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড তাইওয়ানের আশেপাশের জলে ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট, ফাইটার এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে, যা সমুদ্র এবং আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতার পরীক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। স্থল বাহিনী দ্বীপের উত্তরে দূরপাল্লার, লাইভ-ফায়ার ড্রিল পরিচালনা করে। একই সময়ে, কমান্ডের মুখপাত্রের একটি বিবৃতি অনুসারে, তাইওয়ানের দক্ষিণে জলরাশিতে বিমান, নৌ ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটগুলির সমন্বয়ে গঠিত সিমুলেটেড দূরপাল্লার, যৌথ হামলা চালানো হয়েছিল।
এই সামরিক মহড়াগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি প্রদর্শন করে, যা চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক সক্ষমতা এবং তাইওয়ান সম্পর্কিত কৌশলগত উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে। মহড়াগুলোতে পিএলএ-র বিভিন্ন শাখার মধ্যে জটিল সমন্বয় জড়িত ছিল, যা একটি বিস্তৃত অবরোধ পরিস্থিতির অনুকরণ করে। এই ধরণের মহড়া চীনের তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করার এবং সম্ভাব্যভাবে কোনও সংঘাতের ঘটনায় বাহ্যিক হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের ক্ষমতা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
"অবরোধ ক্ষমতা" ধারণাটি আধুনিক সামরিক কৌশল বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে জাহাজ ও বিমানের চলাচল রোধ করে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করতে নৌ ও বিমান সম্পদ ব্যবহার করা জড়িত। তাইওয়ানের প্রেক্ষাপটে, একটি সফল অবরোধ দ্বীপের অর্থনীতি এবং মিত্রদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।
মহড়াগুলি আধুনিক যুদ্ধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ভূমিকা সম্পর্কেও প্রশ্ন উত্থাপন করে। স্বায়ত্তশাসিত ড্রোন থেকে শুরু করে উন্নত নজরদারি প্রযুক্তি পর্যন্ত সামরিক ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমানভাবে এআই সংহত করা হচ্ছে। এআই অ্যালগরিদমগুলি সম্ভাব্য হুমকি সনাক্ত করতে, সামরিক অভিযানকে অনুকূল করতে এবং কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পরিস্থিতির অনুকরণ করতে বিপুল পরিমাণে ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে। পিএলএ এআই গবেষণা এবং উন্নয়নে প্রচুর বিনিয়োগ করছে বলে জানা যায়, সম্ভবত তাদের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য এআই-চালিত সিস্টেমগুলিকে তাদের সামরিক মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত করছে।
সমাজে এই বিকাশের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সামরিক অভিযানে এআই-এর ক্রমবর্ধমান ব্যবহার জবাবদিহিতা এবং অনিচ্ছাকৃত পরিণতির সম্ভাবনা সম্পর্কে নৈতিক উদ্বেগ উত্থাপন করে। এআই সিস্টেমগুলি যত বেশি স্বায়ত্তশাসিত হবে, উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং ভুল হিসাবের ঝুঁকি তত বেশি, বিশেষত তাইওয়ানকে ঘিরে থাকা উত্তেজনাপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই মহড়ার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুন্ন করেছে। মন্ত্রণালয় বলেছে যে তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং তাইওয়ানের সুরক্ষা রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। তাইওয়ানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বর্তমান অবস্থা হল চীন "জাস্টিস মিশন ২০২৫" মহড়া শেষ করেছে। তবে, বিশ্লেষকরা এই অঞ্চলে অব্যাহত সামরিক কার্যকলাপের প্রত্যাশা করছেন কারণ চীন তার প্রভাব বিস্তার করতে এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতার দিকে যে কোনও পদক্ষেপকে আটকাতে চায়। পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ, ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও সামরিক উন্নয়নের উপর নির্ভর করে আরও বাড়তে পারে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment