নতুন গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে প্রতিদিন মাত্র একটি অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করলেও মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে তামাক চিবানোর সাথে মিলিত হলে। ভারতে পরিচালিত এবং বিএমজে গ্লোবাল হেলথ-এ প্রকাশিত একটি বৃহৎ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রাম অ্যালকোহল পান করলে, যা একটি স্ট্যান্ডার্ড ড্রিঙ্কের সমতুল্য, মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
গবেষণায় বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে স্থানীয়ভাবে তৈরি অ্যালকোহল সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। গবেষকরা মনে করেন যে অ্যালকোহল পান এবং তামাক চিবানোর সম্মিলিত প্রভাব দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মুখের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এই ফলাফল হালকা অ্যালকোহল ব্যবহারের সম্ভাব্য বিপদকে তুলে ধরে, যা মাঝারি পরিমাণে অ্যালকোহল পানে তেমন কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই এমন ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে।
এপিডেমিওলজি এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে গবেষণা দলটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে যারা অ্যালকোহল পান করেন, তামাক ব্যবহার করেন অথবা উভয়ই করেন তাদের মধ্যে মুখের ক্যান্সারের প্রকোপ, যারা কোনটিই করেন না তাদের তুলনায় কেমন। অ্যালকোহল এবং তামাক ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট প্রভাব নির্ণয় করার জন্য খাদ্য এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার মতো অন্যান্য সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলোকেও এই গবেষণায় নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ [কাল্পনিক নাম] বলেছেন, "আমাদের ফলাফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে অল্প পরিমাণে অ্যালকোহল পান করলেও মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে, বিশেষ করে যখন এটি তামাক চিবানোর সাথে মিলিত হয়।" "এটি অ্যালকোহল এবং তামাক ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা প্রচারে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।"
মুখের ক্যান্সার, যা ওরাল ক্যান্সার নামেও পরিচিত, এর মধ্যে ঠোঁট, জিভ, গাল, মুখের ভেতরের অংশ, তালু, সাইনাস এবং গলবিলের (গলা) ক্যান্সার অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এটি বিশ্বব্যাপী একটি উল্লেখযোগ্য জনস্বাস্থ্য সমস্যা, এবং দক্ষিণ এশিয়ায় এর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। বেঁচে থাকার হার বাড়ানোর জন্য প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীরা একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে রোগ নির্ণয় করতে পারেন, যখন চিকিৎসা কম কার্যকর হয়।
এই গবেষণার ফলাফল জনস্বাস্থ্য নীতি এবং ব্যক্তিগত আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অ্যালকোহল পান সীমিত করার এবং তামাক ব্যবহার পরিহার করার পরামর্শ দেন। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচারাভিযানে অ্যালকোহল এবং তামাকের মিলিত প্রভাবের ওপর জোর দেওয়া উচিত, বিশেষ করে সেই অঞ্চলগুলোতে যেখানে তামাক চিবানোর প্রচলন রয়েছে। অ্যালকোহল এবং তামাক কীভাবে মুখের ক্যান্সারের বিকাশে অবদান রাখে, তা বোঝার জন্য এবং প্রতিরোধ ও প্রাথমিক সনাক্তকরণের কার্যকর কৌশলগুলো চিহ্নিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment