বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানাতে বুধবার রাজধানী ঢাকায় হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার দীর্ঘ রোগভোগের পর ৮০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। খালেদা জিয়ার মরদেহ জাতীয় পতাকায় মোড়ানো একটি শববাহী গাড়িতে করে সংসদ ভবনের কাছে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোকাহত মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীতে এসেছিলেন।
পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং ভিড় সামাল দিতে কয়েক হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়। এই শোকের বহিঃপ্রকাশ বাংলাদেশি রাজনীতি এবং দেশের নারীদের জীবনে জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকে তুলে ধরেছে।
জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কর্মী সেতারা সুলতানা বলেন, "আমি শুধু বিদায় জানাতে এতদূর এসেছি। আমি জানি আমি তার মুখ দেখতে পাব না, তবে অন্তত শেষকৃত্যের জন্য তাকে বহনকারী গাড়িটি দেখতে পাব।"
দুই সন্তানের জননী শারমিনা সিরাজ জিয়াকে "অনুপ্রেরণা" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, বিশেষ করে জিয়ার সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত বৃত্তির কথা উল্লেখ করে যা নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নকে সমর্থন করেছিল।
খালেদা জিয়া তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, প্রায়শই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে জিয়ার ক্ষমতায় আগমন বাংলাদেশে নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল, যা ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তাদের নেতৃত্বের সক্ষমতা প্রদর্শন করে। তার শাসনকালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো চ্যালেঞ্জও ছিল। তার সমর্থকরা তাকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চ্যাম্পিয়ন এবং সাধারণ নাগরিকদের অধিকারের পক্ষে একজন উকিল হিসেবে মনে করেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে জিয়ার মৃত্যু হয়, যেখানে বিএনপি বিরোধী দলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন নারী নেত্রী হিসেবে তার legado আজও অনুরণিত হয়, বিশেষ করে उन নারীদের মধ্যে যারা তাকে অগ্রগতি এবং ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখতেন। রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনেকের জন্য তার অবদান এবং বাংলাদেশে নারী অধিকার ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের চলমান সংগ্রাম নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ করে দিয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তার মৃত্যুর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনও দেখার বিষয়।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment