বুধবার বাংলাদেশের ঢাকায় কয়েক লক্ষ মানুষ দেশটির প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানাতে সমবেত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার দীর্ঘ রোগভোগের পর ৮০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোকাহত মানুষ রাজধানীতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। সংসদ ভবনের কাছে রাস্তা দিয়ে যখন জাতীয় পতাকায় মোড়া জিয়ার মরদেহবাহী শোভাযাত্রাটি যাচ্ছিল, তখন তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছিল এবং জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েক হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছিল। এই শোকের বহিঃপ্রকাশ বাংলাদেশি রাজনীতি এবং দেশের নারীদের জীবনে জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকে তুলে ধরেছে। জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কর্মী সেতারা সুলতানা বলেন, "আমি শুধু বিদায় জানাতে এতদূর এসেছি। আমি জানি আমি তার মুখ দেখতে পাব না, তবে অন্তত শেষকৃত্যের জন্য তার বহনকারী গাড়িটি দেখতে পাব।"
জিয়ার কর্মজীবন বাংলাদেশি রাজনীতিতে নারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল, যা বাধা ভেঙে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পথ প্রশস্ত করেছে। দুই সন্তানের জননী শারমিনা সিরাজ জিয়াকে "অনুপ্রেরণা" হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং জিয়া প্রবর্তিত বৃত্তির কথা তুলে ধরেন, যা নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল।
খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার রাজনৈতিক জীবন প্রায়শই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দ্বারা চিহ্নিত ছিল, যা বাংলাদেশি রাজনীতিতে একটি জটিল গতিশীলতা তৈরি করে। দুর্নীতিসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ও বিতর্ক মোকাবেলা করা সত্ত্বেও জিয়া বিএনপিতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে জিয়ার মৃত্যু হল, যেখানে বিএনপি বিরোধী দলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন নারী নেত্রী হিসেবে তার ঐতিহ্য, যিনি ঐতিহ্যবাহী প্রথাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, তা আজও অনুরণিত হয়, বিশেষ করে সেই নারীদের মধ্যে যারা তাকে অগ্রগতি ও ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখেছিলেন। রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া তার স্থায়ী প্রভাব এবং দেশজুড়ে অনেকের কাছ থেকে পাওয়া গভীর শ্রদ্ধার প্রমাণ হিসেবে কাজ করেছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment