যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, কারণ ছুটির মরসুমের একেবারে শুরুতে একটি মারাত্মক শীতকালীন ঝড় উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়্যার জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরের ১,৬০০টি ফ্লাইট বাতিল এবং ৭,৪০০টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে রয়েছে জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিউআর্ক লিবার্টি বিমানবন্দর এবং লাGuardia বিমানবন্দর। এই তিনটি বিমানবন্দরই নিউ ইয়র্ক মহানগর এলাকাতে অবস্থিত। এছাড়া, বোস্টন, শিকাগো এবং কানাডার টরন্টোতেও উল্লেখযোগ্যভাবে বিমান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। বিমানবন্দরগুলো সামাজিক মাধ্যমে ভ্রমণকারীদের নিজ নিজ এয়ারলাইন্সের সাথে তাদের ফ্লাইটের অবস্থা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৪:০০ (২১:০০ জিএমটি) থেকে শনিবার দুপুর ১:০০ পর্যন্ত শীতকালীন ঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটি এবং দক্ষিণ কানেকটিকাটে ২৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে। এই ঝড় এমন একটা সময়ে আঘাত হেনেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের মানুষজন পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে ছুটি কাটানোর জন্য ভ্রমণ করছে। এই ঐতিহ্য উত্তর আমেরিকার বাইরেও অনেক সংস্কৃতিতে পালিত হয়।
বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স উল্লেখযোগ্যভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। জেটব্লু এয়ারওয়েজ ২ ২৯টি ফ্লাইট বাতিল করেছে, যেখানে ডেল্টা এয়ার লাইন্স ২৪১টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। রিপাবলিক এয়ারওয়েজ এবং সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স যথাক্রমে ১৮০টি এবং ১৫১টি ফ্লাইট বাতিলের খবর জানিয়েছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্স এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সও প্রায় ১০০টি করে নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এই ব্যাপক ফ্লাইট বাতিলের প্রভাব শুধু যাত্রীদের তাৎক্ষণিক অসুবিধার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে তা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে পণ্য সরবরাহে বিলম্ব হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। আবহাওয়া-সংক্রান্ত কারণে ভ্রমণ বিঘ্নিত হওয়ার অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হয়, কারণ ব্যবসা এবং ব্যক্তি অপ্রত্যাশিত বিলম্ব এবং বর্ধিত খরচের সাথে নিজেদের মানিয়ে নেয়।
এয়ারলাইন্স এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটগুলোর জট সামাল দিতে এবং আটকে পড়া যাত্রীদের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল। ভ্রমণকারীদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং এয়ারলাইন্সের আপডেটগুলো ঘনিষ্ঠভাবে নজরে রাখার এবং শীতকালীন ঝড় বাড়ার সাথে সাথে সম্ভাব্য বিলম্ব ও বাতিলের জন্য প্রস্তুত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই বিপর্যয় আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা যে চরম আবহাওয়ার ঘটনার কারণে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, সে কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment