মিয়ানমার প্রায় পাঁচ বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো রবিবার একটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা এর বৈধতা ও ন্যায্যতা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা দ্বারা আয়োজিত এই নির্বাচনকে সমালোচকরা "লোক দেখানো" নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং এটি ভয় ও ভীতির পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মান্দালয়ে, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট-জেনারেল তাইজা কিয়াও, যিনি সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)-এর প্রার্থী, সম্প্রতি আংমায়ায়থাজান নির্বাচনী এলাকায় একটি নির্বাচনী সমাবেশ করেন। ৩০০-৪০০ লোকের সমাবেশে কিয়াও নির্বাচিত হলে ভালো সময়ের প্রতিশ্রুতি দেন। বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সংবাদদাতা জোনাথন হেডের মতে, অনেক অংশগ্রহণকারীকে উৎসাহহীন মনে হয়েছে, কেউ কেউ গরমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এবং ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হওয়া কিছু লোক সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই চলে যান।
ইউএসডিপি সামরিক বাহিনীর সাথে যুক্ত রাজনৈতিক দল। আসন্ন ভোটকে অনেকেই ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর জান্তার শাসনকে বৈধ করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।
অং সান সু চি সহ মূল বিরোধী ব্যক্তিত্বদের বাদ দেওয়া এবং তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পার্টিকে বিলুপ্ত করার কারণে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুন্ন হয়েছে। সামরিক বাহিনী ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তাদের পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দিয়েছে, যে নির্বাচনে এনএলডি ভূমিধস জয় পেয়েছিল, যদিও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই দাবিগুলোর বিরোধিতা করেছেন।
পর্যবেক্ষকদের অভাব এবং গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকারের উপর বিধিনিষেধ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের মতে, এই কারণগুলো এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।
ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনের ফলাফল এবং মিয়ানমারের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর এর প্রভাব অনিশ্চিত রয়ে গেছে, তবে এই প্রক্রিয়াটি ইতিমধ্যেই দেশটির রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও গভীর করেছে এবং গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment