নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বড়দিনের দিনে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক হামলার আগে নাইজেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। বৃহস্পতিবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এই হামলার দায় স্বীকার করে একটি বিবৃতি দেন এবং দাবি করেন যে এটি আইএসআইএস সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছিল, যারা খ্রিস্টানদের হত্যা করছিল। এরপরই এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ তুগগার চ্যানেলসটিভিকে জানান, তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে কথা বলেছেন এবং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহে নাইজেরিয়ার ভূমিকার কথা নিশ্চিত করেছেন। তুগগার বলেন, "আমরা দুবার কথা বলেছি। আমরা ১৯ মিনিট কথা বলেছি।"
ট্রাম্পের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে যে খ্রিস্টানদের লক্ষ্যবস্তু করার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, "আজ রাতে, কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে আমার নির্দেশে, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার আইএসআইএস সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী এবং মারাত্মক হামলা চালিয়েছে, যারা মূলত নিরীহ খ্রিস্টানদের বহু বছর, এমনকি শতাব্দী ধরে দেখা যায়নি এমন পর্যায়ে লক্ষ্যবস্তু করে নৃশংসভাবে হত্যা করছে! আমি এর আগে এই সন্ত্রাসবাদীদের সতর্ক করেছিলাম যে তারা যদি খ্রিস্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে এর চরম মূল্য দিতে হবে, এবং আজ রাতে তাই হয়েছে। যুদ্ধ বিভাগ অসংখ্য নিখুঁত হামলা চালিয়েছে, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রই করতে সক্ষম।"
নাইজেরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততা দুটি দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী সহযোগিতার পরিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে বোকো হারাম এবং ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) সহ বিভিন্ন ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে চলমান সংগ্রাম চলছে। এই গোষ্ঠীগুলো ব্যাপক সহিংসতা, বাস্তুচ্যুতি এবং মানবিক সংকটের জন্য দায়ী, যা লেক চাদ অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করেছে।
জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা, তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে, নাইজেরিয়ার একটি স্থায়ী উদ্বেগের বিষয়। ট্রাম্পের বিবৃতিতে খ্রিস্টানদের লক্ষ্যবস্তু করার উপর জোর দেওয়া হলেও, এই সংঘাত বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে প্রভাবিত করেছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে ধর্মীয় বিভাজন দিয়ে সংঘাতের চিত্র তৈরি করা হলে তা বিদ্যমান উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিতে পারে।
নাইজেরিয়ার সরকার সামরিক অভিযান, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং radicalization-এর অন্তর্নিহিত আর্থ-সামাজিক কারণগুলো মোকাবেলার প্রচেষ্টার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য কাজ করছে। নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী অভিযানে মার্কিন সামরিক বাহিনী ভবিষ্যতে কতটা জড়িত থাকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মার্কিন সরকার এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment