ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে পদার্পণ করায় রাশিয়ার আর্থিক ব্যবস্থার ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের কথা উল্লেখ করে একজন রুশ কর্মকর্তা রাশিয়ায় সম্ভাব্য ব্যাংকিং সংকট নিয়ে সতর্ক করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, "একটি অনাদায়ী ঋণের সংকট দেখা দিতে পারে। আমি যুদ্ধের আরও বিস্তার বা অবনতি নিয়ে ভাবতে চাই না।"
পরিকল্পিত শান্তি আলোচনার আগে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ওপর তাদের বোমা হামলা জোরদার করেছে বলে খবর আসার পরেই এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস এই সপ্তাহান্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চাইছে। জেলেনস্কি রবিবার ফ্লোরিডায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করবেন বলে জানা গেছে।
২০২২ সালের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনীতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছিল। এর প্রধান কারণ ছিল চীন ও ভারতের পক্ষ থেকে ছাড়কৃত রুশ তেলের বর্ধিত চাহিদা, যা ক্রেমলিনের আর্থিক মজুদ টিকিয়ে রাখে এবং এর সামরিক অভিযানে অর্থায়ন করে।
তবে, সাম্প্রতিক প্রবণতা এই গতিশীলতায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। জ্বালানির দাম কমে গেছে এবং ইউরোপ ও আমেরিকা উভয়ই বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেছে, যা রাশিয়ার রাজস্ব প্রবাহকে প্রভাবিত করছে। রয়টার্সের মতে, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে তেল ও গ্যাস রাজস্ব ২২% হ্রাস পেয়েছে, এবং ডিসেম্বরের আয় প্রায় ৫% হ্রাস পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সম্ভাব্য ব্যাংকিং সংকট ইউক্রেন সংঘাত অব্যাহত থাকায় রাশিয়া যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, তা তুলে ধরে। এই যুদ্ধ কেবল উল্লেখযোগ্য মানবিক মূল্য এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতাই সৃষ্টি করেনি, সেই সাথে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলার প্রাথমিক সাফল্য সত্ত্বেও রুশ অর্থনীতির দুর্বলতাগুলোকেও উন্মোচিত করেছে। জ্বালানি রপ্তানির উপর নির্ভরতা এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বর্তমানে রাশিয়ার আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংঘাতের একটি সমাধান খুঁজে বের করার জন্য চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে এই পরিস্থিতি উন্মোচিত হচ্ছে। পরিকল্পিত শান্তি আলোচনার ফলাফল এবং যুদ্ধের ভবিষ্যৎ গতিপথ সম্ভবত রাশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর আর্থিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment