অস্ট্রেলিয়ার সম্প্রতি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার কারণে বিশ্বজুড়ে অভিভাবকদের মধ্যে একটি আলোচনা শুরু হয়েছে, যা অনেককে তাদের নিজ দেশেও অনুরূপ পদক্ষেপের প্রয়োজন কিনা তা বিবেচনা করতে উৎসাহিত করছে। এই বিতর্ক স্কুল থেকে বাচ্চাদের আনা-নেওয়ার সময়, খেলার মাঠ, অনলাইন ফোরাম এবং গ্রুপ চ্যাটে চলছে, যেখানে TikTok এবং Instagram-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর তরুণদের উপর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ান আইনটি, যা এই মাসে প্রণীত হয়েছে, জরিপ অনুসারে দেশের মধ্যে অভিভাবকদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন পেয়েছে। তবে, কিছু কিশোর-কিশোরী ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর উপায় খুঁজছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনা ডিজিটালভাবে সংযুক্ত বিশ্বে এই ধরনের বিধিনিষেধ কার্যকর করার চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে।
বৈশ্বিক আলোচনা অভিভাবকদের মধ্যে তাদের সন্তানদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে ক্রমবর্ধমান অস্বস্তিকেই প্রতিফলিত করে। স্পেনে, একজন বাবা তার কিশোরী মেয়ের প্যারেন্টাল কন্ট্রোল এড়ানোর ক্ষমতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন, যার কারণে তিনি শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট অ্যাপ নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। তার এই অনুভূতি কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানদের অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় যে অসহায় বোধ করেন, তা তুলে ধরে।
ফ্রান্সে, তিন সন্তানের জননী সোশ্যাল মিডিয়ার তরুণদের উপর প্রভাব সম্পর্কে তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন, তিনি বলেন যে তিনি তার সন্তানদের ১৫ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত স্মার্টফোন দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তবে, তিনি সরকারি নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, তিনি পরামর্শ দেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ চূড়ান্ত সমাধান নাও হতে পারে।
চিলির একজন মা ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছেন যে শিশুদের দায়িত্বশীলভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শেখানো মূলত অভিভাবকদের দায়িত্ব, সরকারের নয়। এই দৃষ্টিকোণটি ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপের জটিলতাগুলো নেভিগেট করার ক্ষেত্রে পিতামাতার নির্দেশনা এবং শিক্ষার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
বেশ কয়েকটি দেশ এখন অস্ট্রেলিয়ার মতো আইন গ্রহণের কথা ভাবছে। মালয়েশিয়ার সরকার ২০২৬ সাল থেকে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ডেনমার্কও ইউরোপে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা বিবেচনা করছে, যা সম্ভবত অনলাইন শিশু সুরক্ষা বিধিমালার জন্য একটি নতুন নজির স্থাপন করতে পারে। এই সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে শিশুদের প্রবেশাধিকারের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের দিকে একটি ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment