মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর রবিবার প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ব্যাপকভাবে সীমাবদ্ধ এই নির্বাচনটি দেশটির ৩৩০টি টাউনশিপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে ৬৫টি টাউনশিপে ভোট বাতিল করা হয়েছে।
ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে ভোটের প্রাথমিক পর্বের পর জানুয়ারি মাসের ১১ এবং ২৫ তারিখে আরও দুটি অতিরিক্ত রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। এএফপি (Agence France-Presse)-এর মতে, মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইংকে নেপিদোতে একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে দেখা গেছে।
এই নির্বাচনটি সামরিক বাহিনী এবং বিভিন্ন বিরোধী দলের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে দেশের বিশাল এলাকা বর্তমানে দুর্গম। সমালোচকরা এই নির্বাচনকে সামরিক শাসনের বৈধতা দেওয়ার জন্য একটি ধাপ্পাবাজি হিসেবে ব্যাপকভাবে নিন্দা করেছেন।
সামরিক বাহিনী ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ক্ষমতা দখল করে, যেখানে অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ভূমিধসে জয়লাভ করে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মূলত ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে সঠিক বলে মনে করেন। অভ্যুত্থানের পর অং সান সু চি এবং অন্যান্য অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সামরিক সরকার বলেছে যে এই নির্বাচন স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং দেশকে বেসামরিক শাসনের দিকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তবে, অনেক বিরোধী দল নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে। এনএলডিকে এই বছরের শুরুতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যার ফলে তারা বর্তমান নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না।
জাতিসংঘ এবং বেশ কয়েকটি পশ্চিমা সরকার নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যেখানে অন্তর্ভুক্তির অভাব এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার দমনকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা সামরিক সরকারকে সমস্ত স্টেকহোল্ডারের সাথে আলোচনায় বসার এবং মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল এবং চলমান সংঘাতের উপর এর প্রভাব এখনও দেখার বিষয়।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment