মিয়ানমারে রবিবার থেকে ধাপে ধাপে নির্বাচন শুরু হয়েছে। এই নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে একটি প্রহসন হিসেবে সমালোচনা করা হচ্ছে, কারণ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বিলুপ্ত করা হয়েছে, অসংখ্য নেতাকে কারাবন্দী করা হয়েছে এবং চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে ধারণা করা হচ্ছে দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ ভোট দিতে পারবে না। সামরিক সরকার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রায় পাঁচ বছর পর এই ভোট গ্রহণ করছে, যা ব্যাপক বিরোধিতার জন্ম দিয়েছে এবং গৃহযুদ্ধে রূপ নিয়েছে।
আগামী মাস জুড়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, চীন সরকারের সমর্থনে সামরিক জান্তা বর্তমান অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে নিজেদের ক্ষমতাকে বৈধতা দিতে এবং সুসংহত করতে চাইছে। নির্বাচন ব্যাহত বা বিরোধিতা করার অভিযোগে নতুন আইনে ২০০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকের জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
রবিবার ভোটগ্রহণের সময় বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিস্ফোরণ ও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। মান্দালয় অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন, রবিবার ভোরে একটি জনশূন্য বাড়িতে রকেট হামলায় তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে এবং বছরের পর বছর ধরে অর্জিত গণতান্ত্রিক অগ্রগতিকে নস্যাৎ করে দেয়। এরপর ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন ব্যাপক বিক্ষোভ এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীর জন্ম দেয়। গৃহযুদ্ধের কারণে কয়েক লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং একটি জটিল মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধের কারণে এই নির্বাচন বৈধ বিরোধী কণ্ঠস্বরকে বাদ দিয়েছে এবং এর কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। সামরিক সরকার বলছে, স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং বেসামরিক শাসনের পথে ফিরে যাওয়ার জন্য এই নির্বাচন জরুরি, যদিও এই পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা এখনও অস্পষ্ট। বিবিসি সামরিক সরকারের কাছে মন্তব্য জানতে চেয়েছিল, কিন্তু এখনও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment