মিয়ানমারে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ২০২৫ সালের ২৮শে ডিসেম্বর শুরু হয়েছে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর এটিই প্রথম নির্বাচন। আল জাজিরার টনি চেংয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইয়াঙ্গুনসহ সারা দেশের ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে।
প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তা জানিয়েছে, এই নির্বাচন স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং অবশেষে বেসামরিক শাসনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো এই নির্বাচনকে অবাধ বা সুষ্ঠু কোনোটিই নয় বলে ব্যাপকভাবে সমালোচনা করেছে। অং সান সু চি সহ অনেক বিরোধী ব্যক্তিত্ব এখনও বন্দী আছেন বা তাদের অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনার নীতিমালা সামরিক সরকার তৈরি করেছে, যা স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জান্তা তাদের পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, আগের সরকার দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল এবং আরও অস্থিরতা রোধ করতে অভ্যুত্থান জরুরি ছিল। সমালোচকরা বলছেন, এই নির্বাচন সামরিক শাসনের বৈধতা দেওয়ার জন্য একটি ভণ্ডামি।
জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) একজন মুখপাত্র বলেছেন, "এই নির্বাচন একটি প্রহসন"। এনইউজি হল জান্তার বিরোধী একটি ছায়া সরকার। "এটি সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাকে সুসংহত করতে এবং মিয়ানমারের জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।" এনইউজি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর ফলাফল স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।
মিয়ানমারের পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভক্ত। কিছু দেশ সামরিক সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, আবার কেউ কেউ সংলাপ এবং গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ বারবার সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল এবং মিয়ানমারের ভবিষ্যতের উপর এর প্রভাব অনিশ্চিত। সামরিক বাহিনী নির্বাচনের পর একটি বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে অনেক পর্যবেক্ষক এর আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সামরিক বাহিনী এবং বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্ভবত নির্বাচন-পরবর্তী পরিবেশ পর্যবেক্ষণ এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নবগঠিত সরকারের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা মূল্যায়ন করা হবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment