যুক্তরাষ্ট্র এই বছর বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে তার দৃষ্টিভঙ্গিকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করেছে, যার শুরুটা হয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসনের জানুয়ারিতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সাহায্য আটকে দেওয়ার মাধ্যমে এবং যার চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (USAID) ভেঙে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে। এনপিআর-এর গ্লোবাল হেলথ করেসপন্ডেন্ট ফাতমা তানিসের মতে, এই পদক্ষেপের বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সাহায্য সংস্থা USAID ভেঙে দেওয়া আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সঙ্গে দেশটির যুক্ত হওয়ার পদ্ধতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন। এনপিআর-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তানিস বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতে এটি একটি বিপর্যয়কর বছর।" ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মার্কিন বৈদেশিক নীতির ভিত্তি ছিল, যা বেসামরিক বৈদেশিক সাহায্য ও উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করত। এর কর্মসূচিগুলো দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং গণতন্ত্রের প্রচারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করত।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপগুলোর কারণ ছিল অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সরকারি ব্যয় কমানোর আকাঙ্ক্ষা। তবে সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই कटौतीগুলো বিদেশের মাটিতে মার্কিন প্রভাবকে দুর্বল করবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দুর্বল জনগোষ্ঠীর ক্ষতি করবে। জানুয়ারিতে তহবিল আটকে দেওয়ার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সাহায্য কর্মসূচি প্রভাবিত হয়, যার ফলে জরুরি পরিষেবা সরবরাহে বিলম্ব এবং ব্যাঘাত ঘটে।
USAID ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সাহায্যকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। অনেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্যোগগুলোতে, বিশেষ করে এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এই পদক্ষেপ জাতিসংঘের গৃহীত দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
এই পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি এখনও দেখার বাকি। মার্কিন বৈদেশিক সাহায্যের ভবিষ্যৎ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব নির্ভর করবে সরকার কীভাবে সম্পদ পুনর্বণ্টন করে এবং আগামী বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে যুক্ত হয় তার উপর।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment