ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ওকানাগান ক্যাম্পাসের গবেষকরা ২০২৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর ঘোষণা করেন যে, তাঁরা মিট্রাফাইলিনের উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্মোচন করেছেন। মিট্রাফাইলিন একটি বিরল প্রাকৃতিক যৌগ যা ক্যান্সার-বিরোধী প্রভাবের সাথে সম্পর্কিত। সায়েন্স নিউজে প্রকাশিত এই আবিষ্কারে, দুটি গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা অণুগুলোকে আকার দিয়ে এবং ঘুরিয়ে যৌগটির চূড়ান্ত রূপ দেয়। এর মাধ্যমে একটি বৈজ্ঞানিক ধাঁধার সমাধান হয়েছে, যা বহু বছর ধরে বিদ্যমান ছিল। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার মিট্রাফাইলিন এবং এর সাথে সম্পর্কিত যৌগগুলোর টেকসই উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা সম্ভবত নতুন ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে।
গবেষণা দলের মতে, এই এনজাইমগুলোর সনাক্তকরণ বিজ্ঞানীদের মিট্রাফাইলিন তৈরির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বুঝতে এবং প্রতিলিপি করতে সহায়তা করে। "কীভাবে উদ্ভিদ এই জটিল অণুগুলো সংশ্লেষ করে, তা বুঝতে পারলে, আমরা সম্ভবত এই জ্ঞানকে আরও দক্ষ এবং টেকসই উপায়ে সেগুলো উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতে পারি," বলেছেন এই গবেষণার প্রধান লেখক ড. [প্রধান গবেষকের নাম]। জটিল এনজাইম এবং অণুগুলোর মিথস্ক্রিয়া বিশ্লেষণ করতে দলটি উন্নত এআই অ্যালগরিদম ব্যবহার করেছে, যা ডিকোডিং প্রক্রিয়াটিকে দ্রুত করেছে। এই অ্যালগরিদমগুলোকে উদ্ভিদের বিপাকীয় পথের বিশাল ডেটাসেটের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, যা তাদের উচ্চ নির্ভুলতার সাথে অজানা এনজাইমের কার্যকারিতা অনুমান করতে সাহায্য করে।
মিট্রাফাইলিন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার প্রতিশ্রুতিশীল ক্যান্সার-বিরোধী এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে উল্লেখযোগ্য মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। তবে, প্রকৃতিতে এর বিরলতা গবেষণা এবং ওষুধ তৈরির জন্য এর সহজলভ্যতা সীমিত করেছে। উদ্ভিদ থেকে মিট্রাফাইলিন নিষ্কাশনের ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিটি অকার্যকর এবং পরিবেশগতভাবে টেকসই নয়। এআই-চালিত বিশ্লেষণের মাধ্যমে অর্জিত বায়োসিন্থেটিক পথের নতুন ধারণা এই সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠার একটি পথ খুলে দেয়।
এই আবিষ্কারের তাৎপর্য মিট্রাফাইলিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। উদ্ভিদ সম্ভাব্য ঔষধি বৈশিষ্ট্যযুক্ত অসংখ্য জটিল রাসায়নিক যৌগ তৈরি করে বলে জানা যায়। তবে, উদ্ভিদের বিপাকের জটিলতার কারণে এই যৌগগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই এখনও অনাবিষ্কৃত বা দুর্বলভাবে বোঝা যায়। এই গবেষণা উদ্ভিদ রসায়নের গোপনীয়তা উন্মোচন করতে এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কারের গতি বাড়াতে এআই এবং মেশিন লার্নিংয়ের সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। ড. [প্রধান গবেষকের নাম] বলেছেন, "উদ্ভিদ হলো মাস্টার কেমিস্ট, এবং আমরা তাদের সম্ভাবনার কেবল শুরুটা জানতে পেরেছি।"
গবেষণা দলের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো সিন্থেটিক বায়োলজি কৌশল ব্যবহার করে মিট্রাফাইলিনের উৎপাদন অপ্টিমাইজ করা। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে যৌগটি উৎপাদনের জন্য অণুজীবের প্রকৌশলগত পরিবর্তন করা জড়িত। দলটি উন্নত থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত মিট্রাফাইলিনের নতুন এবং উন্নত সংস্করণ ডিজাইন করতে এআই ব্যবহারের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে। গবেষকরা আশাবাদী যে এই কাজটি আগামী বছরগুলোতে নতুন এবং কার্যকর ক্যান্সার চিকিৎসার বিকাশে সহায়ক হবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment