ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের মতে, রাশিয়া রবিবার তিনটি ইরানি যোগাযোগ উপগ্রহকে কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করেছে। জুলাই মাসের পর থেকে এটি দ্বিতীয় যৌথ অভিযান, যা রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ভস্টোচনি উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে পরিচালিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পায়া, কওসার এবং জাফর-২ নামের উপগ্রহগুলোকে পৃথিবীর চারপাশে ৫০০ কিলোমিটার (৩১০ মাইল) উচ্চতার একটি কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে। ১৫০ কিলোগ্রাম (৩৩০ পাউন্ড) ওজনের পায়া হলো ইরানের পাঠানো সবচেয়ে ভারী উপগ্রহ। কওসারের ওজন ৩৫ কিলোগ্রাম (৭৭ পাউন্ড), যেখানে জাফর-২-এর ওজন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
এই উৎক্ষেপণ মহাকাশ প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্রমবিকাশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাশিয়ার মতো দেশগুলোর সহায়তায় মহাকাশ উৎক্ষেপণের ক্রমবর্ধমান সহজলভ্যতা ইরানকে তাদের উপগ্রহ সক্ষমতা বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে। এই উন্নয়নের যোগাযোগ, নজরদারি এবং সম্ভাব্য সামরিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রভাব রয়েছে।
স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য। আধুনিক স্যাটেলাইটগুলো প্রায়শই স্বায়ত্তশাসিত কার্যক্রম, ডেটা প্রক্রিয়াকরণ এবং ছবি বিশ্লেষণের জন্য এআই ব্যবহার করে। এআই অ্যালগরিদম স্যাটেলাইটের কর্মক্ষমতা অপ্টিমাইজ করতে, সম্ভাব্য ত্রুটিগুলির পূর্বাভাস দিতে এবং সংগৃহীত ডেটার গুণমান বাড়াতে পারে। এই নির্দিষ্ট ইরানি স্যাটেলাইটগুলোতে এআই কতটা সমন্বিত করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে এটি বৃহত্তর মহাকাশ শিল্পে একটি ক্রমবর্ধমান প্রবণতা।
পশ্চিমা দেশগুলো এর আগে ইরানের স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, আশঙ্কা করছে যে এটি দেশটির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করতে পারে। এই উদ্বেগের কারণ হলো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যেকার প্রযুক্তিগত মিল। ইরান দাবি করে যে তাদের মহাকাশ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং যোগাযোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
এসোসিয়েটেড প্রেসের মতে, জুলাই মাসে ভস্টোচনি থেকে অনুরূপ একটি উৎক্ষেপণে একটি ইরানি স্যাটেলাইট এবং রাশিয়ার কিছু স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে পাঠানো হয়েছিল। রোসকসমস স্টেট স্পেস কর্পোরেশন সেই উৎক্ষেপণের একটি ছবি প্রকাশ করেছিল।
এই তিনটি স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ ইরানের মহাকাশ কর্মসূচির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই কর্মসূচির ভবিষ্যৎ উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার উপর এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্ভবত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। স্যাটেলাইটগুলোর সক্ষমতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যবহার সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত তথ্য আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment