নাইজারের সামরিক সরকার দেশের অভ্যন্তরে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে মানুষ ও পণ্য অধিগ্রহণসহ একটি সাধারণ সমাবেশের অনুমোদন দিয়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত এক সরকারি বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ক্ষমতা দখলের পর থেকে চলমান নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলায় সামরিক শাসনের প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকার বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান মেনে জাতীয় প্রতিরক্ষায় অবদান রাখার জন্য মানুষ, সম্পত্তি এবং পরিষেবা অধিগ্রহণ করতে পারবে। নাইজার যখন ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার সম্মুখীন, এবং এর ভূখণ্ডে অসংখ্য সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়, তখন এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
জেনারেল আবদুরাহামানে চিয়ানি নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকার ২০২৩ সালের জুলাই মাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এই অভ্যুত্থানের ফলে আন্তর্জাতিক নিন্দা ও নিষেধাজ্ঞা নেমে এসেছে, যা নাইজারের ভঙ্গুর অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
জনগণকে একত্রিত করার সিদ্ধান্তটি নাইজারের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর তীব্রতাকে তুলে ধরে। দেশটি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিস্তার নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, যার মধ্যে কিছু আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সাথে যুক্ত, যারা আঞ্চলিক অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের কার্যক্রম প্রসারিত করেছে। প্রতিবেশী দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসোতেও একই ধরনের হুমকি বিদ্যমান, যে দেশগুলো বর্তমানে সামরিক শাসনের অধীনে রয়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট (ইকোওয়াস) নাইজারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং গণতান্ত্রিক শাসনের প্রত্যাবর্তনের দাবি জানিয়েছে। তবে, সামরিক সরকার এখন পর্যন্ত এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে, যা রাজনৈতিক সংকটকে আরও গভীর করছে। নাইজার, মালি ও বুরকিনা ফাসো সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে, যা সামরিক শাসনকে আরও নিঃসঙ্গ করে তুলেছে।
সাধারণ সমাবেশের তাৎপর্য এখনো দেখার বিষয়। সরকার কীভাবে মানুষ ও পণ্য অধিগ্রহণ করবে, এবং এর ফলে জনগণের মধ্যে আরও অসন্তোষ সৃষ্টি হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই পদক্ষেপ বিদ্যমান মানবিক চ্যালেঞ্জগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, কারণ সম্পদ সামরিক প্রচেষ্টায় স্থানান্তরিত হবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment