গাজার একজন চিকিৎসক ডঃ হুসাম আবু সাফিয়াকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ইসরায়েলি ডিটেনশনে এক বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে, যার কারণে তার ছেলে প্রকাশ্যে তার মুক্তির জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তার ছেলের মতে, ডঃ আবু সাফিয়া ডিটেনশনে থাকাকালীন দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। তিনি ২০২৪ সালের ২৮শে ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন।
তার ছেলে তার বাবাকে একজন নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক হিসেবে বর্ণনা করেছেন যিনি ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যেও কামাল আদওয়ান হাসপাতালে তার রোগীদের ছেড়ে যেতে রাজি হননি। গাজার উত্তরে অবস্থিত এই হাসপাতালটি চিকিৎসা সরবরাহ ও কর্মী সংকটের কারণে সেবা প্রদানে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে, যা চলমান সংঘাতের কারণে আরও বেড়েছে।
সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে চিকিৎসা কর্মীদের আটক করা স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেস এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে বর্ণিত চিকিৎসা নিরপেক্ষতার সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, স্বাস্থ্যকর্মীদের আটক বা বাধা দেওয়া বেসামরিক জনগণের জন্য, বিশেষ করে যারা জরুরি চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন তাদের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
ডঃ আবু সাফিয়ার ছেলে বলেন, "আমার বাবা অন্যের জীবন বাঁচাতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।" "রোগীদের প্রতি তার অঙ্গীকার ছিল অবিচল, এমনকি এর জন্য তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে হয়েছে। তার আটক আমাদের পরিবারের জন্য কেবল একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডিই নয়, তিনি যে সম্প্রদায়ের সেবা করেছেন তার জন্যও একটি ক্ষতি।"
আইন বিশেষজ্ঞরা ডঃ আবু সাফিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ক্রমাগত আটকের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে আন্তর্জাতিক আইনি মানদণ্ড অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায্য বিচারের নিশ্চয়তা থাকার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনিক আটক, যেখানে ব্যক্তিদের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটকে রাখা হয়, সেই প্রথা মানবাধিকার সংস্থা, যেমন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দ্বারা সমালোচিত হয়েছে, যারা যুক্তি দেখায় যে এটি মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত ডঃ আবু সাফিয়ার আটকের সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। তারা পূর্বে বলেছিল যে নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তবে ডঃ আবু সাফিয়ার ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করেনি।
এই ঘটনাটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে স্বাস্থ্যকর্মীরা যে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তা তুলে ধরে, যারা প্রায়শই চরম চাপের মধ্যে কাজ করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন। ডঃ আবু সাফিয়ার চলমান আটকের কারণে গাজার ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তার মুক্তি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চলছে, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো তার পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে। পরবর্তী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ডঃ আবু সাফিয়ার সুস্থতা এবং চূড়ান্ত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ক্রমাগত আইনি আপিল এবং কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখা হবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment