ক্যালিফোর্নিয়ার বিলিয়নিয়ারদের ওপর প্রস্তাবিত সম্পদ কর প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তীব্র বিরোধিতার জন্ম দিয়েছে, যা রাজ্যটি থেকে তাদের সম্ভাব্য প্রস্থান নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রস্তাবটি, যা এখনও ব্যালটের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেনি, ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দাদের যাদের সম্পদের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি, তাদের সম্পদের ০.৫% এর সমতুল্য এককালীন কর দিতে হবে, যা পাঁচ বছরে পরিশোধযোগ্য।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট পিটার থিয়েল এবং গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ যদি এই কর আইনে পরিণত হয় তবে ক্যালিফোর্নিয়া ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। সিলিকন ভ্যালির একটি অংশের প্রতিনিধিত্বকারী ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি রো খান্না X (সাবেক টুইটার)-এ প্রতিবেদনটি স্বীকার করে বলেন, "আমি তাদের খুব মিস করব," যা একসময় প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের একটি অনুভূতিকে প্রতিধ্বনিত করে।
সম্পদ করের সমর্থকরা স্বাস্থ্যসেবার জন্য সম্ভাব্য ফেডারেল তহবিল হ্রাস পূরণে এই থেকে আসা রাজস্ব ব্যবহার করতে চান। তবে, ২০২৬ সালের নভেম্বরের ব্যালটে এটির স্থান নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রথমে যথেষ্ট সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে।
খান্নার কর উদ্যোগের সমর্থনে প্রযুক্তি সম্প্রদায়ের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি স্টার্টআপ অ্যান্ডুরিলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পামার লাকি সতর্ক করে বলেছেন যে এই করের কারণে প্রতিষ্ঠাতাদের করের বোঝা মেটাতে তাদের কোম্পানির একটি বড় অংশ বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে, যা উদ্ভাবন এবং প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন যে এই তহবিল "জালিয়াতি, অপচয় এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব"-এর জন্য ব্যবহৃত হবে।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে উচ্চ-সম্পদশালী ব্যক্তিদের সম্ভাব্য প্রস্থান রাজ্যের অর্থনীতি এবং কর ভিত্তির উপর বৃহত্তর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রযুক্তি খাতে সম্পদের কেন্দ্রীভূত হওয়ার অর্থ হলো অল্প সংখ্যক প্রস্থানও রাজ্যের রাজস্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি সম্পদ করের দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতা এবং তাদের সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত পরিণতি সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে।
সম্পদ কর নিয়ে বিতর্ক সম্পদ পুনর্বণ্টন এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে তুলে ধরে। প্রস্তাবকারীরা যুক্তি দেন যে এই ধরনের কর আয় বৈষম্য দূর করতে এবং প্রয়োজনীয় সরকারি পরিষেবাগুলোর তহবিল যোগাতে সাহায্য করতে পারে। বিরোধীরা মনে করেন যে এটি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে পারে, মেধাবীদের দূরে সরিয়ে দিতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে।
প্রস্তাবিত কর নেট ওয়ার্থের ধারণাকে ব্যবহার করে, যা এআই-চালিত আর্থিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে, বিভিন্ন উৎস থেকে ডেটা একত্রিত করে অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ক্রমবর্ধমান নির্ভুলতার সাথে গণনা করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে রিয়েল এস্টেট হোল্ডিং, স্টক পোর্টফোলিও এবং অন্যান্য সম্পদ। তবে, সম্পদের মূল্যায়ন, বিশেষ করে বেসরকারি কোম্পানি বা উদীয়মান প্রযুক্তির সাথে যুক্ত সম্পদগুলোর মূল্যায়ন ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং ওঠানামার প্রবণ হতে পারে, যা করের দায়বদ্ধতা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি করতে পারে।
সম্পদ কর প্রস্তাবের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো স্বাক্ষর সংগ্রহ পর্ব। যদি প্রস্তাবকারীরা যথেষ্ট সংখ্যক বৈধ স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে সফল হন, তবে এই পরিমাপটি ২০২৬ সালের নভেম্বরের ব্যালটে রাখা হবে, যা ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটারদের এর ভাগ্য নির্ধারণ করতে দেবে। এই ভোটের ফলাফল রাজ্যের প্রযুক্তি শিল্প এবং এর সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment