সিডনির বন্ডি বিচ হামলায় নিহতদের পরিবার সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মারাত্মক ঘটনার পর ক্রমবর্ধমান ইহুদি-বিদ্বেষের (anti-Semitism) বিরুদ্ধে একটি জাতীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার প্রকাশিত একটি খোলা চিঠিতে, ১১ জন ভুক্তভোগীর আত্মীয়স্বজন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজের কাছে একটি রাজকীয় কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা হামাসের ৭ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে ইসরায়েলের উপর হামলার পর থেকে ইহুদি-বিদ্বেষী মনোভাবের দ্রুত এবং বিপজ্জনক বৃদ্ধি হিসেবে যা বর্ণনা করেছেন, সেটির তদন্তের জন্য এই কমিশন গঠনের কথা বলেছেন।
বন্ডি বিচে হানুক্কা (Hanukkah) উদযাপনের সময় এই হামলাটি হয়, যাতে ১৫ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন ইহুদি। দুইজন বন্দুকধারী সমাবেশে গুলি চালালে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং এর ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, "সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আমরা ইহুদি-বিদ্বেষের যে উত্থান দেখেছি, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং এর জরুরি ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রয়োজন।" "আমরা মনে করি, এই ঘৃণার মূল কারণগুলো পরীক্ষা করার জন্য এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিরোধের জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের সুপারিশ করার জন্য একটি রাজকীয় কমিশন সবচেয়ে উপযুক্ত উপায়।"
অস্ট্রেলিয়ায় রাজকীয় কমিশন হলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারি তদন্ত, যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা এবং প্রমাণাদি খতিয়ে দেখার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা রাখে। এর निष्कर्षগুলো সরকারি নীতিকে জানাতে এবং সম্ভাব্য আইন পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করতে পারে।
পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে তদন্তের এই আহ্বান এমন এক সময়ে এসেছে, যখন অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বজুড়ে ইহুদি-বিদ্বেষ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাতের পর থেকে। ইহুদি সম্প্রদায়ের নেতারা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, ভাঙচুর এবং হুমকি সহ ইহুদি-বিদ্বেষী ঘটনার বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ইহুদি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডেবোরা স্টোন এক বিবৃতিতে বলেছেন, "আমরা ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইহুদি-বিদ্বেষী বাগাড়ম্বর এবং ভীতি প্রদর্শনের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখেছি।" "সরকারকে অবশ্যই এই উদ্বেগগুলোকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য निर्णायकভাবে কাজ করতে হবে।"
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে যে সরকার এই অনুরোধটি বিবেচনা করছে। একজন মুখপাত্র বলেছেন, "সরকার সব ধরনের ইহুদি-বিদ্বেষের নিন্দা জানায় এবং সকল অস্ট্রেলিয়ানদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
প্রস্তাবিত তদন্তে সম্ভবত সামাজিক মাধ্যম, রাজনৈতিক আলোচনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ইহুদি-বিদ্বেষ বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য ও বৈষম্য মোকাবেলার জন্য বিদ্যমান আইন ও নীতিগুলোর কার্যকারিতাও এতে খতিয়ে দেখা হতে পারে।
বন্ডি বিচের ঘটনা এবং এর ফলস্বরূপ একটি জাতীয় তদন্তের আহ্বান অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি-বিদ্বেষের বিষয়টিকে নতুন করে সামনে এনেছে। পরিবারগুলোর অনুরোধের প্রতি সরকারের প্রতিক্রিয়া ইহুদি সম্প্রদায় এবং বৃহত্তর জনসাধারণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। পরবর্তী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এবং রাজকীয় কমিশন গঠনের বিষয়ে সম্ভাব্য ঘোষণা।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment