ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের টিকিটের দামের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, সাম্প্রতিক বিক্রয়কালে টিকিটের চাহিদা নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। সোমবার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস সামিটে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইনফান্তিনো জানান, ১৫ কোটির বেশি টিকিটের আবেদন জমা পড়েছে।
উচ্চমূল্যের কারণে অনেক ভক্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর (যে দেশগুলো এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে) দর্শকরা। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে এই দামকে "পুরোপুরি পাগলামি" বলে অভিহিত করেছেন।
ইনফান্তিনো এই উদ্বেগের জবাবে বলেন, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে অর্জিত আয়ের বেশিরভাগ অংশ বিশ্বব্যাপী ফুটবল উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "ফিফা না থাকলে বিশ্বের ১৫০টি দেশে ফুটবল থাকত না।"
ডিসেম্বরের শুরুতে টিকিটের সর্বশেষ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ইনফান্তিনোর এটাই ছিল প্রথম আনুষ্ঠানিক বক্তব্য। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের টিকিটের মূল্য কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই এটি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, কারণ কিছু টিকিটের দাম আগের টুর্নামেন্টগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
ফিফার নীতি অনুযায়ী, বিশ্বকাপ থেকে অর্জিত আয়ের একটি অংশ বিশ্বব্যাপী ফুটবল উন্নয়ন কর্মসূচিতে পুনরায় বিনিয়োগ করা হয়। এই কর্মসূচিগুলোর লক্ষ্য হলো তৃণমূল পর্যায়ের উদ্যোগ, অবকাঠামো প্রকল্প এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোচিং শিক্ষাকে সহায়তা করা। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে তহবিলের নির্দিষ্ট বরাদ্দ টুর্নামেন্ট শেষে ফিফার আর্থিক প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সমালোচকদের মতে, টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে অনেক দর্শক, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিশ্বকাপ দেখতে আসা থেকে বঞ্চিত হবেন। তারা মনে করেন, ফিফার উচিত সাশ্রয়ী মূল্যের ওপর জোর দেওয়া, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ টুর্নামেন্টটি দেখার সুযোগ পায়। ফিফার মূল্য নির্ধারণ কৌশলের সমর্থকরা মনে করেন যে, টিকিটের প্রচুর চাহিদা থাকায় দাম বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক এবং এই থেকে অর্জিত অর্থ বিশ্বব্যাপী ফুটবল উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ৪৮টি দল অংশ নেবে, যা আগের ৩২ দলের বিন্যাস থেকে সম্প্রসারিত। এই সম্প্রসারণের ফলে ফিফার আয় আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে, যা উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য আরও বেশি তহবিল সরবরাহ করবে। ২০২৬ সালের গ্রীষ্মকালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬টি শহরে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। টিকিট বিক্রি এবং বিতরণ সংক্রান্ত আরও বিস্তারিত তথ্য ফিফা আগামী মাসগুলোতে ঘোষণা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment