সূত্র জানায়, সিরিয়ার শীর্ষ নেতারা ২০১৮ সালের শরতে বাশার আল-আসাদের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে মিলিত হয়েছিলেন দেশটির সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট গণকবর এবং নির্যাতন কেন্দ্রগুলোর ক্রমবর্ধমান প্রমাণ লুকানোর কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য। দামেস্কের দিকে মুখ করে থাকা প্রাসাদে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানরা কালো এসইউভির বহর নিয়ে এসেছিলেন।
দুই ব্যক্তি জানান, সিরিয়ার একটি কুখ্যাত শাখার প্রধান, নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামাল হাসান একটি প্রস্তাব পেশ করেন, যেখানে গোপন কারাগারে মৃত সিরিয়ানদের পরিচয় সরকারি রেকর্ড থেকে মুছে ফেলার কথা বলা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের জড়িত থাকার প্রমাণস্বরূপ যেকোনো কাগজের নথি মুছে ফেলা। প্রতিবেদকেরা হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করতে এবং আসাদ-যুগের কয়েক ডজন প্রাক্তন কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে এক বছর কাটিয়েছেন।
অভিযোগ করা হয়, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় আসাদ সরকারের মানবাধিকার রেকর্ডের উপর ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক তদন্তের মধ্যে এই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আটক কেন্দ্রগুলোতে মৃত্যুর মাত্রা এবং নির্যাতন চালানোর পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ফাঁস হতে শুরু হওয়ার পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং বিদেশি সরকারগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সিরিয়ার সরকার ধারাবাহিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে তাদের নিরাপত্তা বাহিনী বৈধ সন্ত্রাস দমন অভিযানে জড়িত ছিল। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো গণকবর এবং নির্যাতনের প্রতিবেদনগুলোকে সরকারের বৈধতা ক্ষুণ্ন করার জন্য তৈরি করা অপপ্রচার হিসেবে চিত্রিত করেছে।
কথিত ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টার বর্তমান অবস্থা এখনও অস্পষ্ট। তবে, ফাঁস হওয়া নথি এবং প্রাক্তন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য ক্রমাগতভাবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তদন্তকে আরও বাড়িয়ে তুলছে, যারা সিরিয়ার সংঘাতের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে চায়। গত জানুয়ারিতে দামেস্কের একটি পাবলিক স্কোয়ারে একটি স্মৃতিস্তম্ভের উপর নিখোঁজ সিরিয়ানদের ছবি সাঁটানো ছিল, যা সিরিয়ার সরকার কর্তৃক আটককৃত হাজার হাজার মানুষের অমীমাংসিত ভাগ্যের কথা মনে করিয়ে দেয়।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment