ক্রমবর্ধমান তীব্র আবহাওয়ার প্রভাব কমাতে নিউ জার্সি বন্যাপ্রবণ এলাকা থেকে প্রায় ১,২০০টি বাড়ি কিনে নিয়ে ভেঙে দিয়েছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল আবাসিক এলাকাগুলিকে উন্মুক্ত স্থানে রূপান্তরিত করে বন্যার ঝুঁকি কমানো এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী বাড়ি মালিকদের অন্যত্র সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া।
ম্যানভিলের মতো শহরগুলি এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য, যা নিউ জার্সি থেকে ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত। এই শহরটিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়, নোর’ইস্টার এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দীর্ঘদিনের বন্যার ইতিহাস রয়েছে। ম্যানভিলের প্রাক্তন বাসিন্দা রিচার্ড ওন্ডারকো তাঁর ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে বলেন যে তাঁর বাড়ি প্রায়ই বন্যায় প্লাবিত হত। ১৯৭১ সালের হ্যারিকেন ডোরিয়ার সময় তাঁকে এবং তাঁর ভাইকে নৌকা দিয়ে উদ্ধার করতে হয়েছিল। তিনি আরও বলেন যে বন্যার কারণে তাঁর বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত, যার ফলে তাঁরা ফ্লোরিডাতে চলে যেতে বাধ্য হন।
রাজ্য-চালিত এই কর্মসূচি বন্যা কবলিত অঞ্চলে ইচ্ছুক বিক্রেতাদের কাছ থেকে সম্পত্তি কেনে। সম্পত্তি অধিগ্রহণের পর বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা হয় এবং জমিটিকে স্থায়ীভাবে উন্মুক্ত স্থান হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়। এর ফলে বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার জল প্রবেশ করার জন্য একটি বাফার জোন তৈরি হয় এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ভবিষ্যতে নির্মাণের কাজ বন্ধ করা যায়।
এই উদ্যোগটি মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার ক্রমবর্ধমান তীব্রতা মোকাবেলার জন্য একটি সক্রিয় পদক্ষেপ। অন্যান্য রাজ্য এবং শহরগুলিতেও একই ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে, যেখানে প্রায়শই ফেডারেল সরকারের আর্থিক সহায়তা থাকে। তবে এই বাড়িঘর কিনে নেওয়ার বিষয়টি বিতর্কিত, কারণ অনেক বাসিন্দা বারবার বন্যার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও তাদের বাড়িঘর এবং সম্প্রদায় ছেড়ে যেতে রাজি নন। এই ধরনের কর্মসূচির সাফল্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, কার্যকর যোগাযোগ এবং সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের উপর নির্ভরশীল।
নিউ জার্সির এই কর্মসূচির দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতা নির্ভর করবে ক্রমাগত তহবিল সরবরাহ, বন্যার গতিবিধির উপর নজর রাখা এবং পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ওপর। এছাড়াও, রাজ্যটি বন্যা প্রতিরোধের জন্য আরও কিছু কৌশল বিবেচনা করছে, যেমন বাঁধ নির্মাণ, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি এবং বন্যাপ্রবণ এলাকায় কঠোর বিল্ডিং কোড কার্যকর করা।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment