স্বর্ণ ও রূপার দাম একটি অস্থির বছর শেষ করেছে, যে বছরটিতে ১৯৭৯ সালের পর থেকে তাদের সবচেয়ে বড় বার্ষিক লাভের পথে দেখা গিয়েছিল। বছর শেষে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ৪,৫৪৫ ডলারের বেশি হয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, যা পরে নিউ ইয়ার্স ইভে প্রায় ৪,৩৩০ ডলারে নেমে আসে। রূপা প্রতি আউন্স ৭১ ডলারে লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহের শুরুতে ৮৩.৬২ ডলারের সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
এ বছর লাভের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল, যার মধ্যে ভবিষ্যতের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনা এবং বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের "নিরাপদ আশ্রয়স্থল" হিসেবে সম্পদ খোঁজা অন্যতম। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম XS.com-এর রানিয়া গুল বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণ হলো "কয়েকটি অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণের পারস্পরিক ক্রিয়া"। তিনি ২০২৬ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃক সুদের হার আরও কমানোর প্রত্যাশাকে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
সারা বছর ধরে বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের রিজার্ভে শত শত টন স্বর্ণ যুক্ত করেছে। এই প্রবণতা দেশগুলোর তাদের হোল্ডিংকে বৈচিত্র্যময় করার এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা থেকে রক্ষা করার একটি বৃহত্তর কৌশলকে প্রতিফলিত করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে চাহিদা বৃদ্ধি স্বর্ণের দামের ওপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।
স্বর্ণ ও রূপার দামের ওঠানামা সামষ্টিক অর্থনৈতিক শক্তি এবং ভূ-রাজনৈতিক ঘটনার জটিল পারস্পরিক ক্রিয়াকে প্রতিফলিত করে। মুদ্রাস্ফীতির হার, মুদ্রার মূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক সংঘাতের মতো বিষয়গুলোর দ্বারা প্রভাবিত বিনিয়োগকারীদের মনোভাব বাজারকে রূপ দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনিশ্চয়তার সময়ে মূল্যবান ধাতুগুলোর "নিরাপদ আশ্রয়স্থল"-এর আবেদন বৃদ্ধি পায়, যা চাহিদা এবং দাম বাড়িয়ে তোলে।
বছর শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিশ্লেষকরা স্বর্ণ ও রূপার দামের ভবিষ্যতের গতিপথ অনুমান করার জন্য অর্থনৈতিক সূচক এবং ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নের ওপর কড়া নজর রাখছেন। সুদের হার আরও কমানোর সম্ভাবনা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর পদক্ষেপ এবং পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি সম্ভবত আগামী বছরেও বাজারকে প্রভাবিত করবে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment