সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে চার মাসব্যাপী সামরিক চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে যেটিকে প্রথম মার্কিন স্থল হামলা বলে ঘোষণা করেছিলেন, তার প্রায় এক সপ্তাহ পরেও ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো পর্যন্ত অপ্রতুল। সিএনএন এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস সোমবারের শেষের দিকে জানিয়েছে যে, সিআইএ कथितভাবে ট্রেন ডি আরাগItems স্ট্রিট গ্যাং কর্তৃক ব্যবহৃত একটি বন্দর লক্ষ্য করে ড্রোন ব্যবহার করেছে।
অভিযুক্ত ড্রোন হামলাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভেনেজুয়েলার মধ্যে চলমান ছায়া যুদ্ধের একটি নতুন পর্যায়কে চিহ্নিত করে, যেখানে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ এবং অভ্যন্তরীণ ভিন্নমত সত্ত্বেও নিকোলাস মাদুরো ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন। হামলার তারিখ, সময় এবং সঠিক স্থান এখনো নিশ্চিত করা যায়নি এবং কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনাটি মাদুরোর শাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপের মধ্যে সর্বশেষ ঘটনা, যা দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার অভিযোগে অভিযুক্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ভেনেজুয়েলার কর্মকর্তা ও সংস্থাগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইডোকে দেশের বৈধ রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যদিও ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে গুয়াইডোর প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি জটিল, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার ইতিহাসে প্রোথিত। দেশটি, যা একসময় তার বিশাল তেল মজুদের কারণে লাতিন আমেরিকার অন্যতম ধনী দেশ ছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে, যার ফলে ব্যাপক দারিদ্র্য, অতিমুদ্রাস্ফীতি এবং ব্যাপক অভিবাসন দেখা দিয়েছে। মাদুরোর সমাজতান্ত্রিক নীতি, তেলের দাম হ্রাস এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সংকট আরও বেড়েছে।
অভিযুক্ত মার্কিন ড্রোন হামলা কিছু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের কাছ থেকে নিন্দা কুড়িয়েছে, যারা যুক্তি দেখান যে এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে। সমালোচকরা বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এবং এই অঞ্চলের আরও অস্থিতিশীলতাসহ অপ্রত্যাশিত পরিণতির সম্ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত করেন। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাটিন আমেরিকান স্টাডিজের অধ্যাপক ডঃ ইসাবেলা মার্কেজ বলেছেন, "এ ধরনের পদক্ষেপ সংঘাত বাড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করে এবং ভেনেজুয়েলার জনগণের জন্য বিধ্বংসী পরিণতি ডেকে আনতে পারে।"
ভেনেজুয়েলার সরকার এখনো পর্যন্ত অভিযুক্ত ড্রোন হামলা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে, অতীতে মাদুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন এবং যেকোনো বিদেশী হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেছেন।
ভেনেজুয়েলার ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। মার্কিন ওয়ারগেমগুলোতে মাদুরোর পতনের দৃশ্যপট তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে, তবে সূত্রগুলোর মতে, এর কোনোটিই ভেনেজুয়েলার জন্য ভালো হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর উপর চাপ অব্যাহত রাখলেও, এই পদক্ষেপগুলো শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে নিয়ে যাবে নাকি দেশকে আরও বেশি করে সংঘাতে নিমজ্জিত করবে তা স্পষ্ট নয়। সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভক্ত, কিছু দেশ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে এবং অন্যরা মাদুরোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment