ইয়েমেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, যা দক্ষিণাঞ্চলে একটি সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধ এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি স্বাধীন দক্ষিণ ইয়েমেনি রাষ্ট্র ঘোষণার সম্ভাবনা, যা সৌদি আরব তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
এই মতবিরোধ বিদ্যমান সংঘাতগুলোকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, বিশেষ করে সুদান এবং আফ্রিকার শৃঙ্গে, যেখানে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রায়শই বিরোধী পক্ষগুলোকে সমর্থন করেছে। ২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহীদের দ্বারা সানার দখলকে কেন্দ্র করে ইয়েমেনের চলমান সংঘাত একটি জটিল ছায়াযুদ্ধে পরিণত হয়েছে, যা আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে টেনে এনেছে এবং মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিলকে (এসটিসি) সমর্থন করেছে, যা দক্ষিণ ইয়েমেনের স্বাধীনতার জন্য একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী। এসটিসির আকাঙ্ক্ষা সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনি সরকারের একটি ঐক্যবদ্ধ ইয়েমেন বজায় রাখার লক্ষ্যের সাথে সাংঘর্ষিক। হুথিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা জোটের মূল সদস্য সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যেকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ইয়েমেনি সংঘাত নিরসনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
ইয়েমেনের সংঘাতের গভীর ঐতিহাসিক শিকড় রয়েছে, যা ১৯৯০ সালে একত্রীকরণের আগে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেনে বিভক্ত হওয়ার ফলস্বরূপ। দক্ষিণ ইয়েমেন দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিকীকরণ এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে ক্ষোভ পোষণ করে আসছে, যা বিচ্ছিন্নতাবাদী অনুভূতিকে উস্কে দিয়েছে। এসটিসির প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন এই অঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং সমুদ্র পথ নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থের প্রতিফলন ঘটায়।
বর্তমান উত্তেজনা ইয়েমেনি সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে মধ্যস্থতা করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাগুলোকে আরও জটিল করে তুলতে পারে, যার ফলে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি, দুর্ভিক্ষ এবং রোগ দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বারবার যুদ্ধবিরতি এবং রাজনৈতিক মীমাংসার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু জটিল জোট এবং পরস্পরবিরোধী স্বার্থের কারণে অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। দক্ষিণ ইয়েমেনে নতুন করে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
Discussion
Join the conversation
Be the first to comment